এক নজরে তরমুজ চাষ
পুষ্টিগুণ: তরমুজে ১১ মিলি গ্রাম ক্যালসিয়াম রয়েছে। তাছাড়া খনিজ পদার্থ, শর্করা, খাদ্য শক্তি, ফসফরাস, ভিটামিন বি-১ এবং ভিটামিন-সি রয়েছে।
উন্নত জাত: ভিক্টর সুপার, ওশেন সুগার, বঙ্গ লিঙ্ক, গ্রীন ড্রাগন, সুগার এম্পেরর, ভিক্টরী (FI), এম এস সি বাংলালিংক।
চাষপদ্ধতি: সাধারণত মাদায় সরাসরি বীজ বপনের পদ্ধতি প্রচলিত থাকলেও পলিথিন ব্যাগে চারা তৈরি করে মাদায় রোপণ করাই উত্তম। এতে বীজের পরিমাণ কম লাগে এবং জমিতে ফাঁকা জায়গা থাকার কোনো সম্ভাবনা থাকে না। সাধারণত প্রতি মাদায় ৩-৪টি বীজ বপন করা হয়। বপনের ১০ দিন আগে মাদা তৈরি করে মাদার মাটিতে সার মেশাতে হবে। দুই মিটার দূরে দূরে সারি করে প্রতি সারিতে দুই মিটার অন্তর মাদা তৈরি করতে হবে। মাদার সাইজ হবে ২০×২০×২০ ইঞ্চি। বীজ গজানোর পর প্রতি মাদায় দুটি করে চারা রেখে বাকি চারাগুলো তুলে ফেলতে হবে। বীজ বপনের চেয়ে তরমুজ চাষে চারা রোপণ করাই উত্তম। চারা তৈরি করার জন্য ৪×৫ ইঞ্চি মাপের পলিথিনের ব্যাগে ৫০:৫০ অনুপাতে বালু ও পচা গোবর সার ভর্তি করে প্রতি ব্যাগে একটি করে বীজ বপন করতে হবে। ৩০-৩৫ দিন বয়সের ৫-৬ পাতা বিশিষ্ট একটি চারা মাদায় রোপণ করতে হবে।
সার ব্যাবস্থাপনা: প্রতি শতকে গোবর/ কম্পোষ্ট ১০-১৫ টন, ইউরিয়া ২৮০ কেজি, টি এস পি ১০০ কেজি, এম ও পি ৩২০ কেজি। জমি তৈরির সময় মাদা প্রতি ৮-১০ দিন আগে পঁচা গোবর/জৈব সার ১০ কেজি, খৈল ৫০০ গ্রাম, টি এস পি ২৫০ গ্রাম ও ছাই ৪ কেজি। চারা ২০-৩০ সেমি. (পৌনে ১ ফুট হতে ১ ফুট) লম্বা হলে ৩-৪ সপ্তাহ পরপর ২ কিস্তিতে প্রতি মাদায় ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া ও ২০০ গ্রাম এম ও পি সার প্রয়োগ করতে হবে।
পোকামাকড়:
রোগবালাই:
সতর্কতা: বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন। ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যাবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন। বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে সাত থেকে ১৫ দিন পর বাজারজাত করুন।
আগাছা: জমি নিয়মিত জমি পর্যবেক্ষণ করুন। জমি গভীরভাবে চাষ করতে হবে। চারা গজানোর ২০-২৫ দিন পর আগাছা দমন করতে হবে। গাছ খুব ঘন থাকলে পাতলা করে দিতে হবে।
সেচ:
সরাসরি বীজ বপনের ক্ষেত্রে- বীজগজানোর জন্য একটি হালকা সেচ দিতে হয়। চারা গজানোর পর থেকে স্বাভাবিক নিয়মে সেচ দিতে হবে।
চারা রোপনের ক্ষেত্রে- চারা রোপনের সময় চারার গোড়ায় হালকা সেচ দিতে হবে। পরবর্তী সময়ে মাদায় পানির অভাব হলে ৮-১০ দিন পরপর মাদার চার দিকে রিং করে সেচ দিতে হবে।
আবহাওয়া ও দুর্যোগ: অতিবৃষ্টি ও জলাদ্ধতা সমস্যা সমাধানে নালা তৈরি করে রাখুন যাতে অতি বৃষ্টিতে পানি নিষ্কাশনে সুবিধা হয়।
ফসল সংগ্রহ: জাত ও আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে তরমুজ ফল পাকতে ৮০-১০০ দিন সময় লাগে। ফলের পাকা অবস্থা নির্ণয় করা কঠিন। তবে নিম্নোক্ত লক্ষণ অনুমান করে ফসল পাকা অনুমান করা যায়।
* ফলের বোটার সঙ্গে যে আকাশী রঙ থাকে তা শুকিয়ে বাদামী রঙের হয়।
* খোসার উপরের সূক্ষ লোমগুলো মরে পরে গিয়ে তরমুজের খোসা চকচকে হয়।
* তরমুজের যে অংশটি মাটির উপর লেগে থাকে। তা সবুজ থেকে উজ্জ্বল হলুদ রঙের হয়ে থাকে।
* শাঁস লাল টকটকে হয়।
* আঙ্গুল দিয়ে টোকা দিলে যদি ড্যাব ড্যাব শব্দ হয় তবে বুঝতে হবে যে ফল পরিপক্ক হয়েছে। অপরিপক্ক ফলের শব্দ হবে অনেকটা ধাতবীয়।
ফসল সংরক্ষণ: সংরক্ষণ করা হয় না। সরাসরি বাজারজাতকরণ করা হয়।
ফলন: জাতভেদে শতক প্রতি ৪০০-৪৫০ কেজি।