এক নজরে ধান চাষ
উন্নত জাতঃ বিআর৩ ( আউশ ,আমন এবং বোরো তিন মৌসুমেই চাষাবাদ করা যায় ) , বিআর৪, বিআর-৫, বিআর-১০, বিআর ১১, বিআর-২২, বিআর২৩, বিআর২৫, ব্রি ধান৩০, ব্রি ধান৩২, ব্রি ধান৩৩, ব্রি ধান৩৪, ব্রি ধান৩৭, ব্রি ধান৩৮, ব্রি ধান৩৯, ব্রি ধান৪০, ব্রি ধান৪১, ব্রি ধান৪৪, ব্রি ধান৪৬, ব্রি ধান৪৯, ব্রি ধান৫১, ব্রি ধান৫২, ব্রি ধান৫৩, ব্রি ধান৫৪, ব্রি ধান৫৫, ব্রি ধান৫৬, ব্রি ধান৫৭, ব্রি ধান৬২, ব্রি ধান৬৩, ব্রি ধান৬৪, ব্রি ধান৬৫, ব্রি ধান৬৬, ব্রি ধান৬৭, ব্রি ধান৬৮, ব্রি ধান৬৯, ব্রি ধান৭০, ব্রি ধান৭১ এছাড়া ব্রি ধান৮২, ব্রি ধান৮২, ব্রি ধান৮৩, ব্রি ধান৮৫, ব্রি ধান৮৬ এবং ব্রি হাইব্রিড ধান৪, ব্রি হাইব্রিড ধান৫ ব্রি হাইব্রিড ধান৬ ইত্যাদি।
পুষ্টিগুনঃ চাল শক্তি ও কার্বোহাইড্রেট এর অন্যতম উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যপযোগী সিদ্ধ কলেছাটা চাল থেকে কার্বোহাইড্রেট -৮০ গ্রাম, শক্তি -১৫২৮ কিলোজুল পাওয়া যায়। তাছাড়া অন্যান্য পুষ্টিগুণ যেমন আমিষ-৬.৪ গ্রাম, স্নেহ-০.৪ গ্রাম, আঁশ-০.২ গ্রাম, খনিজ-০.৭ গ্রাম। এছাড়া সামান্য পরিমানে চিনি, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি-১ ও ভিটামিন বি-২ রয়েছে।
আমন; বিআর১, বিআর২, বিআর৩, বিআর৬, বিআর৭, বিআর৮, বিআর৯, বিআর১৪, বিআর১৬, বিআর২০, বিআর২১, বিআর২৪, বিআর২৬, ব্রি ধান২৭, ব্রি ধান৪৮, ব্রি ধান৫৫, ব্রি ধান২৭, ব্রি ধান৪২, ব্রি ধান৪৩, ইরাটম-২৪ ইত্যাদি
আউশ; বিআর১, বিআর২, বিআর৩, বিআর৬, বিআর৭, বিআর৮, বিআর৯, বিআর১২, বিআর১৪, বিআর১৫, বিআর১৬, বিআর১৭, বিআর১৮, বিআর১৯, বিআর২৬, ব্রি ধান২৮, ব্রি ধান২৯, ব্রি ধান৩৫, ব্রি ধান৩৬, ব্রি ধান৪৫, ব্রি ধান৪৭, ব্রি ধান৫০, ব্রি ধান৫৫, ব্রি ধান৫৮, ব্রি ধান৫৯, ব্রি ধান৬০, ব্রি ধান৬১, ব্রি ধান৬৩, ব্রি ধান৬৪, ব্রি হাইব্রিড ধান১, ব্রি হাইব্রিড ধান২, ব্রি হাইব্রিড ধান৩ ইত্যাদি বোরো মৌসুমে চাষ উপযোগী ।
বপনের সময়ঃ আমন ধান জাতভেদে ১ আষাঢ় থেকে ২৫ শ্রাবণ; আউশ ধান জাতভেদে ১৫ চৈত্র - ৫ বৈশাখ এবং বোরো ধান জাতভেদে ১৫ কার্তিক থেকে ১৫ অগ্রহায়ণ বপনের উপযুক্ত সময় ।
চাষপদ্ধতি: মাটির প্রকার ভেদে ৪-৬ টি চাষ ও মই দিতে হবে । প্রথম চাষ গভীর হওয়া দরকার । এতে সেচ ও নিষ্কাশন সুবিধাজনক, পরিচর্যা সহজ, এবং সেচের পানির অপচয় কম হয় । সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। লাইন থেকে লাইন ৮ ইঞ্চি এবং চারা থেকে চারা ৬ ইঞ্চি দূরে লাগাতে হবে ।
বীজের পরিমানঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ৪০-৫০গ্রাম।
সারব্যাবস্থাপনাঃ
সারের বিবরণ |
আউশ (গ্রাম/শতক) |
আমন (গ্রাম/শতক) |
বোরো (গ্রাম/শতক) |
ইউরিয়া |
৬০০ |
৪০৫ |
১০৬০ |
টি এস পি |
২০০ |
১৫০ |
৩০৩ |
এমপি |
৩০০ |
২০২ |
৪৮৫ |
জিপসাম |
১৩৫ |
১৩৫ |
২৪২ |
দস্তা |
২০ |
১০ |
৭০০ |
আমন ধানঃ প্রতি শতকে ইউরিয়া সার ৪০৫ গ্রাম , এমপি ২০২ গ্রাম, টিএসপি ১৫০ গ্রাম, জিপসাম ১৩৫ গ্রাম ও দস্তা ১০ গ্রাম দিতে হবে। শেষ চাষের সময় সম্পূর্ণ টিএসপি, এমপি , জিপসাম, দস্তা ও ১ম কিস্তি ইউরিয়া মাটির সাথে মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। ২য় কিস্তি ইউরিয়া রোপণের ২৫-৩০ দিন পর,৩য় কিস্তি ৪৫-৫০ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে।
বোরো ধানঃ প্রতি বিঘায় (৩৩ শতাংশ) ইউরিয়া সার ৩৫ কেজি, এমপি ১৬ কেজি, টিএসপি ১০ কেজি, জিপসাম ৮ কেজি ও দস্তা ৭০০ গ্রাম দিতে হবে। শেষ চাষের সময় সম্পূর্ণ টিএসপি, এমপি , জিপসাম, দস্তা ও ১ম কিস্তি ইউরিয়া মাটির সাথে মিশিয়ে প্রয়োগ করতে হবে । ২য় কিস্তি ইউরিয়া রোপণের ২৫-৩০ দিন পর, ৩য় কিস্তি ৪৫-৫০ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে ।
আউশ ধান- জমি তৈরির শেষ চাষের সময় শতাংশ প্রতি ৬০০ গ্রাম ইউরিয়া, ২০০ গ্রাম টিএসপি ও ৩০০ গ্রাম এমপি সার প্রয়োগ করতে হবে। বৃষ্টিবহুল বোনা আউশ এলাকায় ইউরিয়া দু’কিস্তিতে প্রয়োগ করা ভাল। প্রথম কিস্তি শেষ চাষের সময় এবং দ্বিতীয় কিস্তি ধান বপনের ৩০-৪০ দিন পর। জমিতে গন্ধক এবং দস্তার অভাব থাকলে শতাংশ প্রতি ১৩৫ গ্রাম জিপসাম ও ২০ জিঙ্ক সালফেট প্রয়োগ করতে হবে।
পোকামাকড়ঃ
রোগবালাইঃ
সতর্কতাঃ বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন। ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবেনা। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন।
আগাছাঃ কাচি ও নিড়ানীর সাহায্যে দমন করুন। যায়। জমিতে পানি আটকিয়ে রেখে এ আগাছা দমন কর। যায়। অক্সাডায়াজন গ্রুপের আগাছানাশক প্রতি হেক্টরে ১ লিটার আগাছা নাশক পরিমান মত পানিতে মিশিয়ে চারা রোপন/বপনের ৩-৬ দিনের মধ্যে প্রয়োগ করতে হবে।
সেচঃ ধান চাষে অন্যান্য ফসলের চেয়ে বেশী পানির প্রয়োজন হয়। ধানের চারা রোপনের পর ১০-১২ দিন পর্যন্ত ছিপ ছিপ পানি রাখতে হয়, যাতে রোপনকৃত চারায় সহজে নতুন শিকড় গজাতে পারে। থোর অবস্থার পর থেকে ধানের দুধ অবস্থা পর্যন্ত জমিতে ছিপ ছিপে পানি রাখতে হবে। তবে ধান কাটার ২ সপ্তাহ পূর্ব থেকে সেচ বন্ধ করে দিতে হবে।
আবহাওয়াওদুর্যোগঃ খরায়-পুকু্র, জলাশয়, খাল ও ডোবায় বৃষ্টির পানি ধরে রাখা। আবহাওয়ার প্রতি নজর রাখা ও সে অনুযায়ী কার্যকারী পরিকল্পনা করুন।নিচু জমিতে বোরো ধানের চাষ করুন।ধান কাটার আগে ও পরে জলি আমন অর্থাৎবোনা আমন ধানের চাষ করুন। যেতে পারে। (জাত নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে ব্রি ধান২২, ব্রি ধান২৩, বিনাশাইল ইত্যাদি) বোরো জমিতে ছিটিয়ে দিতে হবে। আকস্মিক বন্যায় বাধ রক্ষার জন্য ঝুঁকি পুর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে তা সংস্কারনের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করুন। মৌসুমের পুর্বেই স্থানীয় ভাবে নির্মানকৃত বেড়ীবাধগুলো চিহ্নিত করে মেরামত করন।
ফলনঃ জাতভেদে শতক প্রতি ফলন ১২-৩৬ কেজি।
সংরক্ষনঃ শুকানো ধান ঠান্ডা করে বস্তা বা চটের ব্যাগে অথবা আর্দ্রতা রোধক মোটা পলিথিনের ব্যাগে ধান সংরক্ষণ করতে হবে। ধান সংরক্ষনের জন্য আর্দ্রতার পরিমান শতকরা ১৪ ভাগ এর নিচে রাখতে হবে। টন প্রতি ধানে ৩.২৫ কেজি নিম, নিশিন্দা বা বিষকাটালী শুকনা পাতার গুড়া মিশিয়ে সংরক্ষণ করা হলে পোকার আক্রমণ হয় না। ধান ভর্তি বস্তা স্যাত স্যাতে জায়গায় না রেখে উচু জায়গায় রাখতে হবে।