এক নজরে মিষ্টি আলু চাষ
উন্নত জাতঃ বারি মিষ্টি আলু-১, বারি মিষ্টি আলু-২,বারি মিষ্টি আলু-৩বারি মিষ্টি আলু-৪,বারি মিষ্টি আলু-৫, বারি মিষ্টি আলু-৬,বারি মিষ্টি আলু-৭,বারি মিষ্টি আলু-৮, বারি মিষ্টি আলু-৯, বারি মিষ্টি আলু-১০,বারি মিষ্টি আলু-১১, বারি মিষ্টি আলু-১২ ও বারি মিষ্টি আলু-১৩ ইত্যাদি কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কয়েকটি জাত।
পুষ্টিগুনঃ প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যপযোগী মিষ্টি আলুতে জলীয় অংশ- ৬৮.৫ গ্রাম, খনিজ পদার্থ- ১.০ গ্রাম, আঁশ- ০.৮ গ্রাম, খাদ্যশক্তি- ১২০ কিলোক্যালোরি, আমিষ- ১.২ গ্রাম, চর্বি- ০.৩ গ্রাম, শর্করা- ২৮.২ গ্রাম, ক্যালসিয়াম- ২০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-১- ০.০৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-২- ০.০২ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন সি- ২ মিলিগ্রাম রয়েছে।
বপনের সময়ঃ কার্তিক -অগ্রহায়ণ (মধ্য অক্টোবর - মধ্য নভেম্বর)
চাষপদ্ধতিঃ কয়েকটি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে জমি তৈরি করুন। সাধারণত কার্তিক থেকে মধ্য অগ্রহায়ন বা মধ্য অক্টোবর থেকে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত চারা রোপন করা যায়। সমতল পদ্ধতিতে লাইন করে লাগাতে হবে যাতে ২-৩টি গিট মাটির নীচে থাকে। প্রতিটি খন্ডের দৈর্ঘ্য ১০-১২ ইঞ্চি। লাইন-লাইন দূরত্ব ২৪ ইঞ্চি এবং লতা-লতার দূরত্ব ১২ ইঞ্চি রাখতে হবে।
বীজের পরিমানঃ জাত ভেদে বীজের পরিমান (প্রতি হেক্টরে) প্রায় ৫৬,০০০ লতা।
সার ব্যবস্থাপনাঃ
সারের নাম |
শতক প্রতি সার |
হেক্টর প্রতি সার |
গোবর/ জৈব সার |
১-১.৫ কেজি |
৮-১০ টন |
ইউরিয়া |
৬৫০-৭০০ গ্রাম |
১৬০-১৮০ কেজি |
টিএসপি |
৬০০-৬৫০ গ্রাম |
১৫০-১৭০ কেজি |
এমওপি |
৭০০-৭৫০ গ্রাম |
১৮০-২০০ কেজি |
সমুদয় গোবর, টিএসপি ও অর্ধেক ইউরিয়া ও অর্ধেক পটাশ সার জমি তৈরির আগে শেষ চাষের সময় মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপণের ৬০ দিন পর অবশিষ্ট ইউরিয়া ও পটাশ সার সারির পার্শ্বে প্রয়োগ করতে হবে।
পোকামাকড়ঃ
রোগবালাইঃ
সতর্কতাঃ বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন। ব্যবহারের সময় নিরাপদ পোষাক পরিধান করুন। ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন। বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে ৭ থেকে ১৫দিন পর বাজারজাত করুন।
আগাছাঃ আগাছা দমনের জন্য জমি চাষ ও মই দিয়ে ভালোভাবে আগাছা পরিষ্কার, বিশুদ্ধ বীজ ব্যবহার এবং পরিষ্কার কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হবে। ফসল বোনার ২৫-৩০দিনের মধ্যে আগাছা বাছাই করতে হবে। সেচ দেয়ার আগে আগাছা বাছাই করতে হবে।
সেচঃ জমির আর্দ্রতার উপর নির্ভর করে ২-৩ টি সেচ দিতে হবে। লতা মাটিতে লেগে যাওয়ার পর ৩০, ৬০ ও ৯০ দিন পর সেচ দিতে হবে। বৃষ্টি বা অতিরিক্ত সেচের পানি জমিতে জমতে দিবেন না। এতে পাতা ও লতার বার বৃদ্ধি বেশি হয়, কিন্তু ফলন কমে যায়। এরপর জো এলে কোদাল/নিড়ানি দিয়ে মাটির ওপরের চটা ভেঙে দিন।
আবহাওয়া ও দুর্যোগঃ অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি দ্রুত বের করে দেয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
ফলনঃ জাতভেদে শতক প্রতি ফলন ১৬০-১৭০ কেজি।
সংরক্ষনঃ ৯০-১২০ দিনে মিষ্টি আলু পরিপক্ক/পুষ্ট হয়। তখন এর খোসায় আঁচড় দিলে ঘন দুধের মতো রস বের হয়। এ অবস্থায় বর্ষা আসার আগে লতা কেটে লাঙ্গল/ কোদাল দিয়ে তোলা দরকার। সংরক্ষনের জন্য গোলায় বা মাচায় ৩.৯ ইঞ্চি বালি স্তর বিছিয়ে তার উপর ২৯.৫ ইঞ্চি উঁচু মিষ্টি আলুর স্তর রেখে পুনরায় ৩.৯ ইঞ্চি বালি স্তর দিয়ে ঢেকে দিন। এ ভাবে কয়েক স্তরে মিষ্টি আলুর রাখলে মিষ্টি আলুর উইভিল পোকা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। প্রসেসিং ও খাদ্য তৈরি।