এক নজরে মসুর চাষ
উন্নত জাতঃ বারি মসুর-১, বারি মসুর-২, বারি মসুর -৩, বারি মসুর -৪, বারি মসুর -৫, বারি মসুর -৬, বারি মসুর -৭, বারি মসুর -৮, বিনামসুর -১, বিনামসুর-২, বিনামসুর-৩, বিনামসুর-৪, বিনামসুর-৫, বিনামসুর-৬, বিনামসুর-৭, বিনামসুর-৮, বিনামসুর-৯। জাত সমূহ রবি মৌসুমের জন্য উপোযোগি।
পুষ্টিগুনঃ মসুর ডাল সহজে হজম হয় এবং এতে আমিষের পরিমাণ অনেক বেশি, জাত ভেদে প্রায় শতকরা ২৫-২৮ ভাগ। মসুর ডালের পুষ্টিগুন নানাবিধ। প্রতি ১০০ গ্রাম মসুরে আছে জলীয় অংশ-১২.৪ গ্রাম, খনিজ পদার্থ- ২.১ গ্রাম, আঁশ-০.৭ গ্রাম, খাদ্যশক্তি-৩৪৩ কিলোক্যালরি, আমিষ-২৫.১ গ্রাম, ক্যালসিয়াম- ৬৯ মিলিগ্রাম, লৌহ- ৪.৮ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন-২৭০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি-২-০.৪৯ মিলিগ্রাম ও শর্করা-৫৯ গ্রাম ইত্যাদি।
বপনের সময়ঃ কার্তিকের ২য়-৩য় সপ্তাহ ( অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ- নভেম্বরের ১ম সপ্তাহ)।
চাষ পদ্ধতিঃ ছিটিয়ে অথবা লাইন উভয় পদ্ধতিতেই বীজ বপন করা যায়। লাইনে বপনের ক্ষেত্রে লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব ১ ফুট রাখতে হবে। জমিতে জো থাকা অবস্থায় ২/৩ টি চাষ ও মই দিয়ে জমি প্রস্তুত করতে হবে। সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে।
বীজের পরিমানঃ জাত ভেদে প্রতি শতকে ১৫০-১৮০ গ্রাম।
সার ব্যবস্থাপনাঃ
সারের নাম |
বিএআরআই (বারি) জাতের জন্য হেক্টর প্রতি সার |
বিআইএনএ (বিনা) জাতের জন্য হেক্টর প্রতি সার |
পঁচা গোবর |
৫-১০ টন |
৫-১০ টন |
ইউরিয়া |
৪০-৫০ কেজি |
৩২-৪২ কেজি |
টিএসপি/ডিএপি |
৮০-৯০ কেজি |
১০০-১২৫ কেজি |
এম ও পি |
৩০-৪০ কেজি |
৫০-৬০ কেজি |
জিপসাম |
- |
৮০-১০০ কেজি |
দস্তা |
- |
১.২৮-২.৫৬ কেজি |
বোরিক এসিড |
- |
৫.৮৮ – ৮.৮২ কেজি |
অনুজীব সার |
১.৫ কেজি |
১.৫ কেজি |
বিএআরআই (বারি) জাতের জন্যঃ গোবর/ জৈব সার; পর্যাপ্ত পরিমাণে। ইউরিয়া : ৪০-৫০ কেজি টিএপি; ডিএপি: ৮০-৯০ কেজি; এমও পি: ৩০-৪০ কেজি । বিনা জাতের জন্য গোবর/ জৈব সার;পর্যাপ্ত পরিমাণে। ইউরিয়া : ৩২-৪২ কেজি টিএপি/ ডিএপি: ১০০-১২৫ কেজি; এমও পি: ৫০-৬০ কেজি জিপসাম: ৮০-১০০ কেজি দস্তা সার: ১.২৮-২.৫৬ কেজি। অনুজীব সার প্রয়োগ করতে হবে।প্রতি কেজি বীজের জন্য ৯০ গ্রাম হারে অনুমোদিত অণুজীব সার প্রয়োগ করতে হবে। অনুজীব সার দিলে ইউরিয়া সার দেয়ার প্রয়োজন নেই।
সেচঃ বীজ বপনের আগে খরা হলে সেচ দিয়ে জমিতে জো আসার পর বীজ বপন করতে হবে। জমি একেবারেই শুকিয়ে গেলে হালকা সেচ দিয়ে নিড়ানি দিন। সাধারনত বপনের ২৫-৩০ দিন পর একবার সেচ দেয়া ভালো। জমিতে গোড়া পচা অথবা অন্যান্য ছত্রাকের আক্রমন হলে কোনভাবেই সেচ দেয়া যাবে না, এমন অবস্থায় সেচ দিলে ছত্রাক দ্রুত পুরো জমিতে ছড়িয়ে পরতে পারে।
আগাছাঃ আগাছা দমনের জন্য জমি চাষ ও মই দিয়ে ভালোভাবে আগাছা পরিষ্কার, বিশুদ্ধ বীজ ব্যবহার এবং পরিষ্কার কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার। ফসল বোনার ২৫-৩০ দিনের মধ্যে আগাছা বাছাই করতে হবে। সেচ দেয়ার আগে আগাছা বাছাই করতে হবে।
আবহাওয়া ও দুর্যোগঃ অতি বৃষ্টির কারনে জমিতে পানি বেশি জমে গেলে নালা তৈরি করে তাড়াতাড়ি পানি সরানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
পোকামাকড়ঃ
রোগবালাইঃ
সতর্কতাঃ বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন । ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যাবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন। বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে সাত থেকে ১৫ দিন পর বাজারজাত করুন। বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যাবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যাবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না।
ফলনঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ফলন ৬-৯ কেজি।
সংরক্ষনঃ ফল ভালোভাবে শুকিয়ে, বীজ বস্তা, ড্রাম অথবা পলিথিনে ভরে শুকনা এবং ঠাণ্ডা স্থানে সংরক্ষণ করুন। শুসরী পোকাসহ আন্যান্য গুদামজাত পোকা দমনে প্রতি ১০০ কেজি বীজের বস্তার মধ্যে একটি ফসটক্সিন ট্যাবলেট দিয়ে বস্তার মুখ বন্ধ করে রেখে দিতে হবে। বীজের পরিমান কম হলে নিমের তেল অথবা নিম পাতার শুকনো গুড়া ব্যবহার করতে পারেন। সংরক্ষিত বীজ মাঝে মাঝে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে।