এক নজরে হলুদ চাষ

উন্নত জাতঃ বারি হলুদ-১, বারি হলুদ-২, বারি হলুদ-৩ ইত্যাদি খরিফ মৌসুমে চাষ উপযোগী।

পুষ্টিগুনঃ কাচা হলুদ মসল্লা হিসেবে ব্যবহার ছাড়াও রোগ প্রতিরধে ভুমিকা রাখে ।

বপনের সময়ঃ চৈত্র থেকে বৈশাখ (মধ্য মার্চ থেকে এপ্রিল) মাস হলুদ বপনের উপযুক্ত সময়।

চাষপদ্ধতি: পানি জমে না এমন বেলে ও বেলে দোঁয়াশ মাটির প্রকার ভেদে ৪-৬ টি চাষ ও মই দিতে হবে । প্রথম চাষ গভীর হওয়া দরকার । লাইন থেকে লাইন ২০ ইঞ্চি এবং চারা থেকে চারা ১০ ইঞ্চি  দূরে লাগাতে হবে ।

বীজের পরিমানঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ৭.২-৮ কেজি।

সার ব্যবস্থাপনাঃ

সারের নাম

শতকপ্রতিসার

হেক্টর প্রতি সার

কম্পোস্ট

২০ কেজি

৫ টন

ইউরিয়া

০.৯ কেজি

২২০ কেজি

টিএসপি

.৫ কেজি

১২৫ কেজি

পটাশ

১ কেজি

২৬০ কেজি

জিপসাম

৪০০ গ্রাম

১০০ কেজি

বোরিক এসিড

২০ গ্রাম

৫.০ কেজি।

 

জমি তৈরীর সময় সকল কম্পোস্ট ও টিএসপি প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া ও পটাশ কন্দ লাগানোর যথাক্রমে ৫০, ৮০, ১১০ দিন পর সমান কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে।

সেচঃ হলুদ লাগানোর পর বৃষ্টি হলে সেচের প্রয়োজন হয় না। তবে বৃষ্টি না হলে ও মাটিতে রসের অভাব থাকলে নালাতে সেচ দিতে হবে এবং ২-৩ ঘন্টা পর নালার অতিরিক্ত পানি বের করে দিন। বৃষ্টির পানি যেন জমতে না পারে সেজন্য পানি নিকাশের ব্যবস্থা রাখুন।

আগাছাঃ আগাছা দমনের জন্য জমি চাষ ও মই দিয়ে ভালোভাবে আগাছা পরিষ্কার, বিশুদ্ধ  বীজ ব্যবহার এবং পরিষ্কার কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার সেচ ও সার দেবার পর জো আসা মাত্র আগাছা  বাছাই করুন।

আবহাওয়া ও দুর্যোগঃ সারিতে বুনোট হবে, যাতে জমির অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি বের করার নালা রাখুন। বাত্তি ফসল তুলে ফেলতে হবে। তাড়াতাড়ি অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি বের করার ব্যবস্থা করুন।

পোকামাকড়ঃ

  • হলুদের থ্রিপস পোকা দমনে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

রোগবালাইঃ

  • হলুদের পাতায় দাগ রোগ দমনে টেবুকোনাজল+ট্রাইফ্লক্সিস্ট্রবিন জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন ৫ গ্রাম নাটিভো) অথবা প্রোপিকোনাজল জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন টিল্ট ৫ মিলি/ ১ মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে  ১০-১২ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
  • হলুদের কন্দপচা রোগ দমনের জন্য কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন-  এইমকোজিম ২০ গ্রাম)  প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে  ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবে। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

সতর্কতাঃ বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুনব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুনব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে নাবালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুনবালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল  কমপক্ষে সাত থেকে ১৫ দিন পর বাজারজাত করুন

ফলনঃ জাতভেদে শতক প্রতি ফলন ৮০-১৩০ কেজি

সংরক্ষনঃ হলুদ উঠানোর পর বড় আকারের বীজ কন্দ ছায়াযুক্ত স্থানে বা ঘরের মেঝেতে বা মাটির নিচে গর্ত করে গর্তের নিচে বালির ৫ সেন্টিমিটার/২ ইঞ্চি পুরু স্তর করে তার উপর আদা রাখার পর বালি দিয়ে ঢেকে দিন। পরে খড় বিছিয়ে দিয়ে ঢেকে দিন। এতে হলুদের গুনাগুন এবং ওজন ভাল থাকে।