এক নজরে কাঁঠাল চাষ

উন্নত জাতঃ বারি কাঁঠাল-১, বারি কাঁঠাল-২, বারি কাঁঠাল-৩, বাউ কাথাল-১ ইত্যাদি খরিফ-১ মৌসুমে চাষ উপযোগী ।

পুষ্টিগুনঃ প্রতি ১০০ গ্রাম ভক্ষণীয় অংশে জলীয় অংশ ৭৭ গ্রাম, শর্করা ১৮.৯ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২০ মিলিগ্রাম, আয়রন ৫০০মিলিগ্রাম রয়েছে তাছাড়া অন্যান্য পুষ্টি উপাদান যেমন আস,ফসফরাস,থায়ামিন ইত্যাদি রয়েছে

বপনের সময়ঃ মধ্য জ্যৈষ্ঠ-মধ্য শ্রাবণ/ জুন-আগষ্ট উপযুক্ত সময়

চাষপদ্ধতি: মাটির প্রকার ভেদে ৪-৬ টি চাষ ও মই দিতে হবে প্রথম চাষ গভীর হওয়া দরকার এতে সেচ ও নিষ্কাশন সুবিধাজনক, পরিচর্যা সহজ এবং সেচের পানির অপচয় কম হয় সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে।সরাসরি বীজ বুনলে, লাইন থেকে লাইন ৪০ ইঞ্চি এবং চারা থেকে চারা ৪০ ইঞ্চি দূরে লাগাতে হবে ।

বীজের পরিমানঃ প্রযোজ্য নয়।

সারব্যবস্থাপনাঃ

বয়স অনুযায়ী কাঁঠালের সার সুপারিশ

 

সারের নাম

সারের পরিমাপ

১-৩ বছর

৪-৬ বছর

৭-১০ বছর

১১-১৫ বছর

১৫ বয়স ও এর অধিক

গোবর/কম্পোস্ট

১৫ কেজি

২০ কেজি

২২.৫ কেজি

২৫কেজি

৩০কেজি

ইউরিয়া

২০০ গ্রাম

৩০০ গ্রাম

৪০০ গ্রাম

৫০০ গ্রাম

৬০০ গ্রাম

টিএসপি

২০০ গ্রাম

২৭৫ গ্রাম

৩৫০ গ্রাম

৪৫০ গ্রাম

৮০০ গ্রাম

এমওপি

১৭৫ গ্রাম

২২৫ গ্রাম

২৭৫ গ্রাম

৩২৫ গ্রাম

৬২৫ গ্রাম

জিপসাম

৪০ গ্রাম

৫০ গ্রাম

৬৫ গ্রাম

৮০ গ্রাম

১৫০ গ্রাম

চারা রোপণের ১০-১৫ দিন আগে ১ × ১ × ১ মিটার গর্ত তৈরি করে তাতে গোবর/কম্পোস্ট ২৫-৩৫ কেজি, টিএসপি ৪০০-৫০০গ্রাম; এমওপি ১৭৫গ্রাম ভালভাবে মাটির সাথে মিশিয়ে গর্ত ভরাট করে রাখুন ।প্রতি বছর বর্ষার আগে বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাসে এবং বর্ষার শেষে আশ্বিন- কার্তিক মাসে ২ কিস্তিতে সার প্রয়োগ করুন। সার গোড়া থেকে ২.৫ হাত দূর দিয়ে যতদূর পর্যন্ত ডালাপালা বিস্তার করেছে ঐ পর্যন্ত মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিন।

সেচঃ কাঁঠাল গাছ জলাবদ্ধতার প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিধায় বর্ষায় বা অতিরিক্ত সেচের কারণে কোন অবস্থায় পানি জমে থাকা চলবে না।

আগাছাঃ খরিফে বেশি বাড়ে ।জুন থেকে অক্টোবরের মাঝে ফুল ফোটে ও বীজ বাত্তি হয় । জমি নিয়মিত জমি পর্যবেক্ষণ করুন ।সেচ ও সার দেবার পর জো আসা মাত্র নিড়িয়ে আগাছা বাছাই ।

আবহাওয়া দুর্যোগঃ খরা দেখা দিলে জমিতে প্রয়োজনীয় সেচের ব্যবস্থা করা অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি বের করার নালা রাখুন। জমির অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি বের করা ব্যবস্থা রাখুন।

 

পোকামাকড়ঃ

  • কাঁঠালের উঁইপোকা দমনে ক্লোরপাইরিফস গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ডার্সবান ৫ মিলি./লি হারে পানিতে মিশিয়ে কান্ডে ও গোড়ার মাটিতে স্প্রে করুন।
  • কাঁঠালের স্কেল পোকা দমনে ফেনিট্রথিয়ন জাতীয় কীটনাশক (যেমন সুমিথিয়ন বা ফলিথিয়ন ২০ মিলিলিটার) প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করুন ।
  • কাঠালের ফলছিদ্রকারী পোকা দমনে সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন: কট বা রিপকর্ড বা সিমবুস বা ফেনম বা এরিভো ১০ ইসি ১০ মিলিলিটার) প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন পরপর ২-৩ বার পুরো গাছে স্প্রে করুন।
  • কাঁঠালের জাব পোকা এবং মিলিবাগ/ছাতরা পোকা দমনে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার।

রোগবালাইঃ

  • কাঁঠালের মুচি পচা রোগ, পাতার দাগরোগ এবং নরম পচা রোগ দমনে মেনকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন- ডাইথেন এম৪৫ অথবা ম্যানার এম৪৫ ২০গ্রাম) অথবা সালফার জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন- কুমুলাস ৪০গ্রাম অথবা গেইভেট ২০গ্রাম) প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১২-১৫দিন পরপর ২-৩বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবে
  • কাঠালের গামোসিস/ রস বা আঠা ঝরা রোগ দমনের জন্য আক্রান্ত বাকল চেছেঁ বোর্দ পেস্ট বা আলকাতরা লাগিয়ে দিন। অথবা কপার অক্সিক্লোরাইড স্প্রে করুন।

সতর্কতাঃ বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবেনা বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে সাত থেকে ১৫দিন পর বাজারজাত করুন

ফলনঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ফলন ২০০-৫৫০ কেজি

সংরক্ষনঃ কাঁঠালের বীজ ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে রাখা যায়