এক নজরে ব্রোকলি চাষ

 

উন্নত জাতঃ বারি ব্রোকলি-

পুষ্টিগুনঃ প্রতি ১০০ গ্রাম বাঁধাকপিতে ৯১.গ্রাম পানি, .গ্রাম আমিষ, .গ্রাম চর্বি, .গ্রাম খনিজ, .গ্রাম আঁশ, .গ্রাম শ্বেতসার রয়েছে। খনিজ লবনের মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম ৩৯ মিঃগ্রাঃ, ম্যাগনেসিয়াম ১০ মিঃগ্রাঃ, ফসফরাস ৪৪ মিঃগ্রাঃ, লৌহ ০.মিঃগ্রাঃ, সোডিয়াম ১৪.মিঃগ্রাঃ, কপার ০.০৮ মিঃগ্রাঃ ও সালফার ৬৭ মিঃগ্রাঃ  

বপনের সময়ঃ মধ্য সেপ্টেম্বর-মধ্য অক্টোবর

চাষপদ্ধতি: গভীর ভাবে ৪-টি চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে তৈরি করতে হবে। বীজ বপনের ৩০-৩৫ দিন পর বা /টি পাতা বিশিষ্ট ১০-১৫ সেন্টিমিটার লম্বা চারা সাধারণত বিকেল বেলা জমিতে রোপণ করতে হয়। তবে সুস্থ ও সবল হলে চারা এক-দেড় মাস বয়সের চারা রোপণ করা যায়। রোপণের জন্য সারি থেকে সারি ২২ ইঞ্চি ও চারা থেকে চারা ১৮ ইঞ্চি দূরত্বে রোপণ করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। পাশাপাশি দুটি বেডের মাঝে ১ ফুট চওড়া এবং ৬ ইঞ্চি গভীর নালা রাখতে হবে।

বীজের পরিমানঃ  জাত ভেদে শতক প্রতি  .- গ্রাম

সার ব্যবস্থাপনাঃ

সারের নাম

শতক প্রতি সার

কম্পোস্ট

১২৫ কেজি

ইউরিয়া

১ কেজি

টিএসপি

৮০০ গ্রাম

পটাশ

৬৫০ গ্রাম

 

সম্পূর্ণ গোবর ও টি এস পি সার জমি তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া ও এমওপি সার ২ কিস্তিতে চারা রোপণের ২০ থেকে ২৫ দিন পর একবার এবং ৩০ -৪০ দিন পর আর একবার উপরি প্রয়োগ করতে হবে। সার দেওয়ার পরপর হালকা সেচ দিতে হবে।

সেচঃ জমিতে পানি যাতে না জমে সে জন্য পানি বের করার ব্যবস্থা রাখুন। পানির আপচয় রোধের জন্য ফিতা পাইপ/ফুটপাম্প/ঝাঝরির সাহায্যে সেচের ব্যবস্থা করুন

আগাছাঃ সেচ ও সার দেবার পর জো আসা মাত্র আগাছা বাছাই। চারা গজানোর ২০-২৫ দিন পর আগাছা দমন করতে হবে। গাছ খুব ঘন থাকলে পাতলা করে দিতে হবে।

আবহাওয়া ও দুর্যোগঃ অতি বৃষ্টির কারনে জমিতে পানি বেশি জমে গেলে নালা তৈরি করে তাড়াতাড়ি পানি সরানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

পোকামাকড়ঃ

  • ব্রোকোলির আর্মিওয়ার্ম- সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন ওস্তাদ ২০ মিলিলিটার  অথবা ম্যাজিক অথবা কট ১০ মিলিলিটার) প্রতি ১০লিটার পানিতে  মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০-১২ দিন পরপর /বার। 
  • কাটুই পোকা- আক্রমণ বেশি হলে কারটাপ জাতীয় কীটনাশক (কেয়ার ৫০ এসপি অথবা সানটাপ ৫০ এসপি  ২০ মিলি / মূখ) অথবা ল্যামডা-সাইহ্যালোথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (ক্যারাটে .৫ ইসি অথবা ফাইটার প্লাস ২.ইসি ১৫ মিলি / ৩ মূখ) ১০ লিটার প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/বার।

রোগবালাইঃ

  •  ইয়োলো ভাইরাস রোগ- আক্রান্ত গাছ তুলে নষ্ট করুন; বাহক পোকা ধ্বংস করুন; ফসল সংগ্রহের পর অবশিষ্ট অংশ ধ্বংস করুন।
  • ব্রোকোলির পাতার রিং দাগ রোগ- ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমনঃ রিডোমিল গোল্ড ২০ গ্রাম) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০-১২ দিন পর পর -বার স্প্রে করতে হবে। স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সবজি বিষাক্ত থাকবে।

সতর্কতাঃ  বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন। ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যাবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন। বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে সাত থেকে ১৫ দিন পর বাজারজাত করুন। বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যাবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না।

ফলনঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ফলন ৪৫-৫০ কেজি।

সংরক্ষনঃ ছায়ায় সংরক্ষণ করুন। মাঝে মাঝে পানি ছিটিয়ে দিন। বেশি দিন সংরক্ষণ এর জন্য হিমাগারে রাখুন।