এক নজরে ফেলন চাষ

 

উন্নত জাতঃ বারি ফেলন-১, বারি ফেলন-২

পুষ্টিগুনঃ ফেলনে প্রচুর পরিমানে খাদ্য শক্তি ও প্রোটিন আছে। 

বপনের সময়ঃ অগ্রহায়ণ (মধ্য নভেম্বর থেকে মধ্য ডিসেম্বর) 

চাষপদ্ধতি: ২/৩ বার চাষ ও মই দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে। বীজ ছিটিয়ে বপন করা যায়। তবে সারিতে বপনের ক্ষেত্রে সারির দূরত্ব ১৫ ইঞ্চি রাখতে হবে। বীজ বপনের ২৫-৩০ দিনের মধ্যে একবার নিড়ানি দিয়ে আগাছ দমন করতে অবে। অতিবৃষ্টির ফলে যাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হতে পারে সেজন্য অতিরিক্ত পানি বের হওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। 

বীজের পরিমানঃ  জাত ভেদে শতক প্রতিছিটিয়ে ১২৫-১৩৫ গ্রাম, লাইনে ১০০-১২০ গ্রাম।

সার ব্যবস্থাপনাঃ

সারের নাম

শতক প্রতি সার

কম্পোস্ট

৩৫ কেজি

ইউরিয়া

১৪০ গ্রাম

টিএসপি

৩৫০ গ্রাম

পটাশ

১৫০ গ্রাম

প্রতি কেজি বীজের জন্য ৯০ গ্রাম হারে অনুমোদিত অণুজীব সার প্রয়োগ করতে হবে। অনুজীব সার দিলে ইউরিয়া সার দেয়ার প্রয়োজন নেই।

সেচঃ জমিতে পানি যাতে না জমে সে জন্য পানি বের করার ব্যবস্থা রাখুন। পানির আপচয় রোধের জন্য ফিতা পাইপ/ফুটপাম্প/ঝাঝরির সাহায্যে সেচের ব্যবস্থা করুন

আগাছাঃ সেচ ও সার দেবার পর জো আসা মাত্র আগাছা বাছাই। চারা গজানোর ২০-২৫ দিন পর আগাছা দমন করতে হবে। গাছ খুব ঘন থাকলে পাতলা করে দিতে হবে।

আবহাওয়া ও দুর্যোগঃ অতি বৃষ্টির কারনে জমিতে পানি বেশি জমে গেলে নালা তৈরি করে তাড়াতাড়ি পানি সরানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

পোকামাকড়ঃ

  • বিছা পোকা- ডিম থেকে সদ্য বের হওয়া কীড়াসহ পাতাটি সংগ্রহ করে পোকা মেরে ফেলতে হবে। কীড়া বড় হয়ে সারা জমিতে ছড়িয়ে পড়ে।  আক্রমণ বেশি হলে এমামেক্টীন বেনজোয়েট জাতীয় কীটনাশক ( যেমন প্রোক্লেইম ১০ গ্রাম) অথবা সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন-রিপকর্ড ১০ তরল অথবা  সিমবুশ ১০ তরল  ২০ মিলিলিটার / ৪ মুখ)  প্রতি ১০ লিটার পানিতে  মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২ বার স্প্রে করতে হবে।
  • ফল ছিদ্রকারী পোকা- আক্রমণ বেশি হলে থায়ামিথক্সাম+ক্লোথায়ারানিলিপ্রল জাতীয় কীটনাশক (যেমন ভলিউম ফ্লেক্সি ৫ মিলিলিটার  অথবা ১মুখ ) অথবা সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন ওস্তাদ ২০ মিলিলিটার  অথবা ম্যাজিক অথবা কট ১০ মিলিলিটার) প্রতি ১০লিটার পানিতে  মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০-১২ দিন পরপর ২/৩ বার।

রোগবালাইঃ

  •  হলদে মোজাইক ভাইরাস- জমিতে সাদা মাছি দেখা গেলে (বাহক পোকা) ইমিডাক্লোরোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ১০ মি.লি. ২ মুখ ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে। সকাল বেলা গাছে ছাই ছিটিয়ে দিলে এই পোকা গাছ থেকে পড়ে যাবে৷
  • পাউডারি মিলডিউ- রোগের আক্রমণ বেশি হলে টেবুকোনাজল+ট্রাইফ্লক্সিস্ট্রবিন জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমনঃ ৫ গ্রাম নাটিভো) অথবা প্রোপিকোনাজল জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন টিল্ট ৫ মিলি/ ১ মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে  ১০-১২ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে ।
  • পাতার দাগ রোগ- রোগের আক্রমণ বেশি হলে কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন- এইমকোজিম ২০ গ্রাম) প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবে।

সতর্কতাঃ  বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন। ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যাবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন। বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে সাত থেকে ১৫ দিন পর বাজারজাত করুন। বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যাবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না।

ফলনঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ফলন ৪-৫ কেজি।

সংরক্ষনঃ ছায়ায় সংরক্ষণ করুন। মাঝে মাঝে পানি ছিটিয়ে দিন। বেশি দিন সংরক্ষণ এর জন্য হিমাগারে রাখুন।