এক নজরে পালংশাঁক চাষ

 

উন্নত জাতঃ বারি পালিংশাক-১, সাথী

পুষ্টিগুনঃ রসুনের অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। নিয়মিত রসুন খেলে রক্তচাপ ও রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে। রসুন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার এর  বিরূদ্ধে কাজ করে।

বপনের সময়ঃ রবি মৌসুমে মধ্য  অক্টোবর-নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ  উপযুক্ত সময় ।

চাষপদ্ধতি: পানি জমে না  এরকম  দোআঁশ মাটিতে নালা তৈরি করে তাতে রসুনের কোয়া রোপণ করা হয়। লাইনে রসুন রোপণের জন্য সাধারণত ৪ মিটার লম্বা ও ১.৫ মিটার প্রস্থের ব্লক তৈরি করা হয়। চার ইঞ্চি দূরত্বের লাইনে  ৩-৪ ইঞ্চি দূরে দূরে ১ (এক) ইঞ্চি গভীর নালায় রসুনের কোয়া লাগাতে হবে। লাগানোর সময় কোয়ার অগ্রভাগ উপরের দিকে রেখে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।

বীজের পরিমানঃ  জাত ভেদে শতক প্রতি ১০ - ১৫ গ্রাম

সার ব্যবস্থাপনাঃ

সারের নাম

শতকপ্রতিসার

কম্পোস্ট

৪০ কেজি

ইউরিয়া

৮০০ গ্রাম

টিএসপি

৩০০ গ্রাম

ইউরিয়া ছাড়া বাকি সব সার শেষ চাষের সময় সমানভাবে ছিটিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিন। ইউরিয়া ৩ কিস্তিতে দিতে হবে। বীজ বোনার ১৫ দিন পর প্রথম কিস্তির ইউরিয়া ৩০০ গ্রাম, বীজ বপনের ২৫ দিন পর দ্বিতীয় কিস্তির ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া এবং বীজ বপনের ৩৫ দিন পর তৃতীয় কিস্তির অবশিষ্ট ২৫০ গ্রাম ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করুন।

সেচঃ শুষ্ক মৌসুমে এক সপ্তাহ পর পর সেচ দিতে হবে। নতুবা শাক খসখসে হয়ে যাবে। জমিতে পানি যেন জমে না থাকে সেজন্য নালা তৈরি রাখতে হবে।

আগাছাঃ জমি  নিয়মিত জমি পর্যবেক্ষণ করুন । সেচ ও সার দেবার পর জো আসা মাত্র  নিড়িয়ে আগাছা  বাছাই। চারা গজানোর ২০-২৫ দিন পর আগাছা দমন করতে হবে। গাছ খুব ঘন থাকলে পাতলা করে দিতে হবে।চারা অবস্থা থেকে রসুন  গঠনের পূর্ব পর্যন্ত ২ থেকে ৩ বার নিড়ানি দিয়ে জমির আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হবে।

আবহাওয়া ও দুর্যোগঃ অতি বৃষ্টির কারনে জমিতে পানি বেশি জমে গেলে নালা তৈরি করে তাড়াতাড়ি পানি সরানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

পোকামাকড়ঃ

  • পাতা সুড়ঙ্গকারী পোকা-সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন-রিপকর্ড ১০ তরল অথবা  সিমবুশ ১০ তরল  ২০ মিলিলিটার / ৪ মুখ)  প্রতি ১০ লিটার পানিতে  মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২ বার স্প্রে করতে হবে। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
  •  ফ্লি বিটল পোকা- সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন-রিপকর্ড ১০ তরল অথবা  সিমবুশ ১০ তরল  ২০ মিলিলিটার / ৪ মুখ)  প্রতি ১০ লিটার পানিতে  মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২ বার স্প্রে করতে হবে। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

 

রোগবালাইঃ

  • পাতার দাগ রোগ - রোগের আক্রমণ বেশি হলে কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন- এইমকোজিম ২০ গ্রাম)  প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে  ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবে।ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
  • পালংশাকের গোড়া পচা রোগ-রোগের আক্রমণ বেশি হলে কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন- এইমকোজিম ২০ গ্রাম)  প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে  ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবে।ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

সতর্কতাঃ  বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন। ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যাবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন। বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে সাত থেকে ১৫ দিন পর বাজারজাত করুন। বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যাবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবে না।

ফলনঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ফলন ৪০ - ৫০ কেজি।

সংরক্ষনঃ বীজ কয়েক দিন রোদে শুকিয়ে ৮%  আর্দ্রতায় এনে প্লাস্টিক/টিনের  কৌটা/ ড্রাম, পলিব্যাগ প্রভৃতি বায়ুরোধী পাত্রে বীজ পূর্ণ করে বায়ুরোধী মুখ আঁটকে সংরক্ষণ করুন। বীজপাত্র অপূর্ণ থাকলে বা  পাত্রের মুখ ভালভাবে  না আঁটকালে বীজের গজানোর হার কমে যাবে।বীজ পাত্র চিহ্ন/লেবেল দিয়ে ঘরের ভিটিতে না রেখে শুকনা ও ঠান্ডা স্থানে মাচায় রাখুন।