এক নজরে আলু চাষ

উন্নত জাতঃ  বারি আলু-১, বারি আলু-, বারি আলু-,বারি আলু-, বারি আলু-১১, বারি আলু-১২, বারি আলু-১৩, বারি আলু-১৫, বারি আলু -১৬, বারি আলু-১৭, বারি আলু-১৮, বারি আলু-১৯, বারি আলু-২০, বারি আলু-২১, বারি আলু-২২, বারি আলু-২৩, বারি আলু-২৪, বারি আলু-২৫, বারি আলু২-, বারি আলু-২৭, বারি আলু-২৮, বারি আলু-২৯, বারি আলু-৩০, বারি আলু-৩১, বারি আলু-৩২, বারি আলু-৩৩, বারি আলু-৩৪, বারি আলু-৩৫, বারি আলু-৩৬, বারি আলু-৩৮, বারি আলু-৩৯, বারি আলু-৪০, বারি আলু-৪১, বারি আলু-৪২, বারি আলু-৪৩, বারি আলু-৪৪, বারি আলু-৪৫, বারি আলু-৪৬, বারি আলু-৪৭, বারি আলু-৪৮, বারি আলু-৪৯ বারি আলু-৫০, বারি আলু-৫১, বারি আলু-৫২, বারি আলু-৫৩, বারি আলু-৫৪, বারি আলু-৫৬, বারি আলু-৫৭, বারি আলু-৫৮, বারি আলু-৫৯, বারি আলু-৬০, বারি আলু-৬১, বারি আলু-৬২, বারি আলু-৬, বারি আলু-৬৪, বারি আলু-৬৫, বারি আলু-৬৬, বারি আলু-৬৭, বারি আলু-৬৮, বারি আলু-৭০, বারি আলু-৭১, বারি আলু-৭২, বারি আলু-৭৩, বারি আলু-৭৪, বারি আলু-৭৫, বারি আলু-৭৬, বারি টি পি এস-১, বারি টি পি এস-২।

পুষ্টিগুনঃ আলুর পুষ্টিগুণ নানাবিধ যেমন খনিজ পদার্থ, আঁশ, খাদ্যশক্তি, আমিষ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ক্যারোটিন,ভিটামিন বি-, ভিটামিন বি-২ ও শর্করা ইত্যাদি। প্রতি ১০০ গ্রাম খাবার উপযোগী আলুতে রয়েছে ৯৭ কিলোক্যালরি, ৭৪ দশমিক ৭ গ্রাম পানি, ২২ দশমিক ৬ গ্রাম শর্করা, ১ দশমিক ৬ গ্রাম আমিষ, শূন্য দশমিক ৬ গ্রাম স্নেহ, শূন্য দশমিক ৪ গ্রাম আঁশ, ১১ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, শূন্য দশমিক ৭ মিলিগ্রাম লোহা, ১০ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি ও শূন্য দশমিক শূন্য ৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-এ ছাড়া আলুর খোসায় আছে ভিটামিন-এ, পটাশিয়াম, লোহা, ভিটামিন-সি ও খাদ্য আঁশ।

বপনের সময়ঃ উত্তরাঞ্চলে মধ্য- কার্তিক (নভেম্বর প্রথম সপ্তাহ),দক্ষিণাঞ্চলে অগ্রহায়ণের ১ম সপ্তাহ থেকে ২য় সপ্তাহ (নভেম্বর মাসের মধ্য থেকে শেষ সপ্তাহ) উপযুক্ত সময় ।

চাষপদ্ধতি: মাটির প্রকার ভেদে ৪-৬ টি চাষ ও মই দিতে হবে । প্রথম চাষ গভীর হওয়া দরকার । এতে সেচ ও নিষ্কাশন  সুবিধাজনক, পরিচর্যা সহজ, এবং সেচের পানির  অপচয় কম হয় সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। লাইন থেকে লাইন ২৪ ইঞ্চি এবং চারা থেকে চারা ১০ ইঞ্চি দূরে লাগাতে হবে ।

বীজের পরিমানঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ৬-৭কেজি।

সার ্যবস্থাপনাঃ

সারের নাম

শতক প্রতি সার

ইউরিয়া

১ কেজি

টিএসপি

৭০০ গ্রাম

পটাশ

৪০০ গ্রাম

জিপসাম

৭০০ গ্রাম

জিংক

২৫ গ্রাম 

বোরিক এসিড

৬০ গ্রাম

গোবর

৪০ কেজি

সমুদয় গোবর, টিএসপি, পটাশ, জিপসাম, দস্তা এবং অর্ধেক ইউরিয়া সার জমি তৈরির শেষ চাষের সময় মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে চারা রোপণের ৩০-৩৫ দিন পর অবশিষ্ট ইউরিয়া মাটি তোলার সময় প্রয়োগ করতে হবে

সেচঃ প্রথম সেচ : বীজ আলু বপনের ২০-২৫ দিনের মধ্যে (স্টোলন বের হওয়া পর্যায়ে) দ্বিতীয় সেচ : বীজ আলু বপনের ৪০-৪৫ দিনের মধ্যে (গুটি বের হওয়া পর্যায়ে)তৃতীয় সেচ : বীজ আলু বপনের ৬০-৬৫ দিনের মধ্যে (গুটি বৃদ্ধি পর্যায়ে) সেচ এমনভাবে প্রয়োগ করতে হয় যেন গাছের গোড়ার মাটি ভালভাবে ভিজে গভীর বা অগভীর নলকূপ বা ভূ-উপরিস্থ পানি হতে পলিথিন হুস পাইপ বা ফারো (নালা) পদ্ধতিতে সেচ প্রয়োগ করাই উত্তম অতিরিক্ত সেচের দরুণ যাতে গাছের গোড়ায় জলাবদ্ধতা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে

আগাছাঃ গভীর চাষ দিয়ে ধাবক ও মুল শিকড় অপসারণ করুন ফসল পর্যায়  গভীর চাষ দিলে আগাছা জন্মাবার সম্ভাবনা কম থাকে পরিষ্কার কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করুন

আবহাওয়া দুর্যোগঃ  আবহাওয়ার কারণে ছত্রাক আক্রমণ হতে পারে তাই নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন করতে হবে অতিরিক্ত পানি দ্রুত বের করে দিন

পোকামাকড়ঃ

  • আলুর কাটুই পোকা দমনে কারটাপ জাতীয় কীটনাশক (কেয়ার ৫০ এসপি অথবা সানটাপ ৫০ এসপি ২০ মিলি / ৪মূখ) অথবা ল্যামডা-সাইহ্যালোথ্রিন জাতীয় কীটনাশক ( ক্যারাটে ২.৫ ইসি অথবা ফাইটার প্লাস ২.৫ ইসি ১৫ মিলি / ৩ মূখ ) ১০ লিটার প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার
  • পাতা সুড়ঙ্গকারি পোকা দমনে থায়ামিথক্সাম+ক্লোথায়ারানিলিপ্রল জাতীয় কীটনাশক (যেমন ভলিউম ফ্লেক্সি ৫ মিলিলিটার  অথবা ১মুখ) অথবা সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন ওস্তাদ ২০ মিলিলিটার অথবা ম্যাজিক অথবা কট ১০ মিলিলিটার) প্রতি ১০লিটার পানিতে  মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০-১২ দিন পরপর ২/৩ বার
  • আলুর জাবপোকা ও সাদামাছি দমনে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার   

রোগবালাইঃ

  • আলুর ঢলে পড়া রোগ, নাবি ধ্বসা ও গোলআলুর স্ক্যাব রোগ দমনে ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক যেমন (  রিডোমিল গোল্ড ২০ গ্রাম)  অথবা কার্বান্ডিজম জাতীয় ছত্রানাশক  যেমন  (এমকোজিম ৫০  ; অথবা গোল্ডাজিম ৫০০ ইসি ১০ মিলি /২ মুখ ) ১০ লি পানিতে মিশিয়ে  ৭ দিন পরপর ৩ বার গাছের গোড়ায় ও মাটিতে স্প্রে করুন আক্রমণ বেশি হলে প্রথম থেকে প্রতি লিটার পানিতে ২গ্রাম রোভরাল মিশিয়ে স্প্রে করুনঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবেব্যাক্টেরিয়ার আক্রমণ হলে ক্ষেতের মাটিতে বিঘা প্রতি ২ কেজি হারে ব্লিচিং পাউডার ছিটাতে হবে
  • মোজাইক রোগ ও পাতা কোকড়ানো রোগের বাহক জাবপোকা, তাই এদের দমনের জন্য ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার
  • আগাম ধ্বসা দমনে আক্রান্ত গাছ সংগ্রহ করে ধ্বংস করা পাতায় ২/১টি দাগ দেখার সাথে সাথে প্রতি লিটার পানিতে আইপ্রোডিয়ন বা মেনকোজেব জাতীয়  ছত্রাকনাশক ( যেমন: রোভরাল বা ডাইথেন এম ৪৫ ২০ গ্রাম ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করুন
  • পাউডারী মিলডিউ দমনে সালফার জাতীয়  ছত্রাকনাশক যেমন (কুমুলাস ৪০  গ্রাম বা গেইভেট বা মনোভিট ২০  গ্রাম অথবা কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: গোল্ডাজিম  বা এমকোজিম ১০ মিলি) ১০ লিটার  পানিতে  মিশিয়ে স্প্রে করুন

সতর্কতাঃ বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুনব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুনব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবেনাবালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন

ফলনঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ফলন ৮০-১৮৮কেজি

সংরক্ষনঃ বাড়িতে এনে আলু পরিস্কার, শুকনো ছায়াযুক্ত জায়গায় রাখুনআলু সংগ্রহ করা সম্পূর্ণ শেষ হলে ১-৭ দিন পরিষ্কার ঠান্ডা জায়গায় আলু বিছিয়ে রেখে পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখলে আলুর গায়ের ক্ষত সেরে যাবে ও পোকার আক্রমণ থেকে সংগৃহীত আলু রক্ষা পাবে কাটা, ফাটা, সবুজ, রোগাক্রান্ত আলু বাছাই করে আলাদা করে তিনটি গ্রেড ( বড়, মাঝারি ও ছোট) করে জালের মত চটের বস্তায় ভরে হিমাগারে পাঠান বাছাই করা আলু ঠান্ডা ও বাতাসযুক্ত ঘরে সংরক্ষণ করতে হবে সংরক্ষিত আলু ৪-৬ ইঞ্চিউঁচু করে মেঝেতে বিছিয়ে রাখা দরকার এছাড়া বাশের তৈরি মাচায়, ঘরের তাকে বা চৌকির নিচে আলু বিছিয়ে রাখা যেতে পারেসংরক্ষিত আলু ১০-১৫ দিন পর নিয়মিত বাছাই করতে হবে রোগাক্রান্ত, পোকা লাগা ও পচা আলু দেখা মাত্র ফেলে দিতে হবে