এক নজরে ভূট্টা চাষ
উন্নত জাতঃ বর্ণালী,শুভ্রা, খইভূট্টা, মোহর, বারি ভূট্টা-৫, বারি ভূট্টা-৬, বারি ভূট্টা-৭, বারি হাইব্রিড ভূট্টা-১, বারি হাইব্রিড ভূট্টা-২, বারি হাইব্রিড ভূট্টা-৩, বারি হাইব্রিড ভূট্টা-৪, বারি হাইব্রিড ভূট্টা-৫, বারি হাইব্রিড ভূট্টা-৬,বারি হাইব্রিড ভূট্টা-৭,বারি হাইব্রিড ভূট্টা-৮,বারি হাইব্রিড ভূট্টা-৯,বারি হাইব্রিড ভূট্টা-১০, বারি হাইব্রিড ভূট্টা-১১, বারি মিষ্টি ভূট্টা-১, বারি বেবি কর্ন ১ ইত্যাদি কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কয়েকটি জাত।
পুষ্টিমান: প্রতি ১০০ গ্রাম ভুট্টাতে ৬৭ গ্রাম জলীয় অংশ এবং ১২৫ কিলোক্যালরি খাদ্দ শক্তি রয়েছে । অন্যান্য পুষ্টিগুন যেমন খনিজ পদার্থ.৮ গ্রাম, আঁশ ১.৯ গ্রাম, আমিষ ৪.৭ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১.১ গ্রাম, আয়রন ১ গ্রাম, ক্যারোটিন ৩২ মাইক্রোগ্রাম । এছাড়া ভিটামিন বি-১, ভিটামিন বি-২ ও শর্করা ইত্যাদি ও রয়েছে ।
বপনের সময়ঃ বাংলাদেশে রবি মৌসুমে মধ্য আশ্বিন থেকে মধ্য অগ্রহায়ন (অক্টোবর-নভেম্বর) এবং খরিফ মৌসুমে ফাল্গুন থেকে মধ্য চৈত্র (মধ্য ফেব্রুয়ারী থেকে মার্চ) পর্যন্ত সময় বীজ বপনের উপযুক্ত সময়।
চাষপদ্ধতি: কয়েকটি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে জমি তৈরি করুন। বীজ লাইনে বুনতে হবে। লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব হবে ৩০ ইঞ্চি sss। লাইনে প্রায় ১০ ইঞ্চি দূরত্বে ১ টি অথবা প্রায় ২০ ইঞ্চি দূরত্বে ২ টি গাছ রাখতে হবে।
বীজের পরিমানঃ জাত ভেদে বীজের পরিমান শতক প্রতি ১০০-১২০ গ্রাম।
সারব্যবস্থাপনাঃ কম্পোজিট জাতের জন্য রবিতে ইউরিয়া ৭০০ গ্রাম-১.২৬ কেজি , খারিফে ৮৭০ গ্রাম-১.০ কেজি । হাইব্রিড জাতের জন্য রবিতে ২.০-২.২৩ কেজি ইউরিয়া।
কম্পোজিট জাতের জন্য রবিতে টিএসপি ৬৮০-৮৭০ গ্রাম, খারিফে ৫৩০-৮৭০ গ্রাম। হাইব্রিড জাতের জন্য রবিতে ৯৭০ গ্রাম-১.০ কেজি টিএসপি।
কম্পোজিট জাতের জন্য রবিতে এমওপি ৩৯০-৫৮০ গ্রাম , খারিফে ২৯০-৪৯০ গ্রাম। হাইব্রিড জাতের জন্য রবিতে ৭৩০-৮৯০ গ্রাম এমওপি।
কম্পোজিট জাতের জন্য রবিতে জিপসাম ৪০০-৬৮০ গ্রাম, খারিফে ৩৯০-৫৮০ গ্রাম । হাইব্রিড জাতের জন্য রবিতে৯৭০ গ্রাম-১.০ কেজি জিপসাম।
কম্পোজিট জাতের জন্য রবিতে দস্তা ৪৫-৫০ গ্রাম, খারিফে ৩৫-৪০ গ্রাম। হাইব্রিড জাতের জন্য রবিতে৪৫-৫০ গ্রাম দস্তা।
কম্পোজিট জাতের জন্য রবিতে বরিক এসিড ৩০-৩৫ গ্রাম, খারিফে ২৫-৩০ গ্রাম ।হাইব্রিড জাতের জন্য রবিতে ৩০-৩৫ গ্রাম বরিক এসিড।
কম্পোজিট জাতের জন্য রবিতে গোবর ১৬-২৪ কেজি , খারিফে ১৬-২৪ কেজি। হাইব্রিড জাতের জন্য রবিতে১৬-২৪ কেজি গোবর।
পোকামাকড়ঃ
রোগবালাইঃ
সতর্কতাঃ বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন। ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবেনা। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন। বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে সাত থেকে ১৫দিন পর বাজারজাত করুন।
আগাছাঃ সেচ ও সার দেবার পর জো আসা মাত্র আগাছা বাছাই ।চারা গজানোর ২০-২৫ দিন পর আগাছা দমন করতে হবে। গাছ খুব ঘন থাকলে পাতলা করে দিতে হবে। প্রতি বর্গমিটারে রবি মৌসুমে ৫০-৬০ টি এবং খরিফ মৌসুমে ৪০-৫০ টি চারা রাখা উত্তম। ৪০ দিন আগাছা মুক্ত রাখুন।
সেচঃ উচ্চ ফলনশীল ভুট্রার আশানুরুপ ফলন পেতে হলে রবি মৌসুমে সেচ প্রয়োগ অত্যাবশ্যক। উদ্ভাবিত জাতে নিম্নরুপ ৩-৪ টি সেচ দেয়া যায়-
প্রথম সেচঃ বীজ বপনের ১৫-২০ দিনের মধ্যে (৪-৬ পাতা)।
দ্বিতীয় সেচঃ বীজ বপনের ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে (৮-১২ পাতা)।
তৃতীয় সেচঃ বীজ বপনের ৬০-৭০ দিনের মধ্যে (মোচা বের হওয়া পর্যায়)।
চতুর্থ সেচঃ বীজ বপনের ৮৫-৮৯ দিনের মধ্যে (দানা বাঁধার পূর্ব পর্যায়)।
ভুট্রার ফুল ফোটা ও দানা বাধার সময় কোনক্রমেই যাতে জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আবহাওয়া ও দুর্যোগঃ তাড়াতাড়ি অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি বের করার ব্যবস্থা করুন। হেলে পড়া গাছ সোজা করে নিন। প্রয়োজনে কয়েকটি গাছ একত্রে বেঁধে দিন।
ফলনঃ জাতভেদে বিঘা প্রতি ফলন ২৫-৪০ মণ।
সংরক্ষনঃ • দানার জন্য ভূট্টাসংগ্রহের বেলায় মো্চার চুলের মতো অঙ্গ শুকিয়ে আসে এবং মোচা খড়ের মতো চকচকে রং ধারণ করলে এবং পাতা কিছুটা হলদে হলে সংগ্রহের উপযুক্ত হয়। এ অবস্থায় মোচা থেকে ছাড়ানো বীজের গোড়ায় কালো দাগ দেখা যাবে। *যে সমস্ত খোল ভূট্টার দানাগুলোকে আবৃত করে রাখে সেগুলো শুকিয়ে যায়। কাঁচা অবস্থায় ভূট্টা খাবার জন্য ব্যবহৃত হয়। সেগুলো খুব সুস্বাদু ও জনপ্রিয়।
পুরো গাছ গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহারের জন্য দানাগুলো কেবল পুষ্ট হতে শুরু করেছে তখনই কেটে গরুকে খাওয়ানো উচিত।*ভূট্টাগাছ থেকে উৎকৃষ্ট সাইলেজ বা গো-খাদ্য তৈরি করা যায়। ***মিষ্টি ভূট্টার সিল্ক বের হওয়ার ২০-২৫ দিনের মধ্যে/ বোনার১১২-১২০ দিনের মধ্যে দানা অ ল্প নরম থাকতেই কচি মোচা সংগ্রহ করুন।*** নিচের দিকের মোচার মাথায় যখন সিল্ক ২.৫-৩.০ সেমি লম্বা হয় তখন ধারালো চাকু/কাঁচি দিয়া কেটে সংগ্রহ করুন।এর পর উপরের আবরণ সহ ২-৩ দিন সংরক্ষণ করুন।উপরের আবরণ সরানোর পর পলিব্যাগে ভরে নিম্ন তাপে ফ্রিজে ১০-১৫ দিন সংরক্ষণ করুন।