ফুল কপি এর বিস্তারিত তথ্য
ফুল কপি এর জাতের তথ্য
জাতের নাম : বারি ফুলকপি-১
জনপ্রিয় নাম : রুপা
উদ্ভাবনকারী প্রতিষ্ঠান : বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি)
গড় জীবনকাল প্রায় (দিন): ১০০
ফলনের গুণগত বৈশিষ্ট্য : ওজন ৮৫০-১০০০ গ্রাম
জাতের ধরণ : আগাম উচ্চ ফলনশীল
জাতের বৈশিষ্ট্য : ফুলকপি চারিদিকে পাতা দ্বারা আংশিক ঢাকা থাকে। সারাদেশে চাষ উপযোগী জাত।
শতক প্রতি ফলন (কেজি) : ১০০ - ১১২
হেক্টর প্রতি ফলন (টন) : ২৫-২৮
প্রতি শতক বীজতলায় বীজের পরিমান : ২ - ৩ গ্রাম
উপযোগী ভূমির শ্রেণী : মাঝারি উচু
উপযোগী মাটি : দোআঁশ, এটেল-দোআঁশ
উৎপাদনের মৌসুম : রবি
বপনের উপযুক্ত সময় :
ভাদ্র-আশ্বিন (মধ্য-আগস্ট থেকে মধ্য অক্টোবর) মাসে বীজ বপন করতে হয় এবং কার্তিক থেকে অগ্রহায়ন পর্যন্ত (মধ্য নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর) জমিতে চারা রোপণ করা যায়।
ফসল তোলার সময় : রোপণের ৬০-৭৫ দিন পর
তথ্যের উৎস : কৃষি প্রযুক্তি হাতবই, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ৬ষ্ঠ সংস্করণ, সেপ্টেম্বর, ২০১৭।
জাতের নাম : বারি ফুলকপি-২
জনপ্রিয় নাম : নেই
উদ্ভাবনকারী প্রতিষ্ঠান : বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি)
গড় জীবনকাল প্রায় (দিন): ৬৫
ফলনের গুণগত বৈশিষ্ট্য : ওজন ৭৫০-৮০০ গ্রাম।
জাতের ধরণ : আগাম উচ্চ ফলনশীল
জাতের বৈশিষ্ট্য : আগাম জাতের ফুলকপি। সারাদেশে চাষের উপযোগী।
শতক প্রতি ফলন (কেজি) : ১০০ – ১১২
হেক্টর প্রতি ফলন (টন) : ২৫-২৮
প্রতি শতক বীজতলায় বীজের পরিমান : ২ - ৩ গ্রাম
উপযোগী ভূমির শ্রেণী : মাঝারি উচু
উপযোগী মাটি : দোআঁশ, এটেল-দোআঁশ
উৎপাদনের মৌসুম : রবি
বপনের উপযুক্ত সময় : আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে বীজ বপনের সময়
ফসল তোলার সময় : রোপণের ৬০-৭৫ দিন পর।
তথ্যের উৎস : কৃষি প্রযুক্তি হাতবই, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ৬ষ্ঠ সংস্করণ, সেপ্টেম্বর, ২০১৭।
ফুল কপি এর পুষ্টিমানের তথ্য
পুষ্টিমান : ফুলকপির পুষ্টিগুন নানাবিধ, যেমন প্রতি ১০০ গ্রাম ফুলকপিতে ০.৮ গ্রাম খনিজ পদার্থ, ১.২% আঁশ, ৪১ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, ২.৬% আমিষ, ৪১ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১.৫ মিলিগ্রাম আয়রন, ০.০২৭ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১, ০.০৩ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২ ও ৭.৫% শর্করা ইত্যাদি পাওয়া যায়।
তথ্যের উৎস : কৃষি ডায়রি, কৃষি তথ্য সার্ভিস, ২০১৭।
ফুল কপি এর বীজ ও বীজতলার তথ্য
বর্ণনা : ঠাণ্ডা ও আর্দ্রতা জলবায়ুতে ফুলকপির ভাল ফলন পাওয়া যায়। সেচ ও পানি নিষ্কাশনের সুবিধা আছে এমন ধরনের সব মাটিতে ফুলকপির চাষ ভাল হয়। আমাদের দেশে মাঘী, অগ্রহায়ণী, পৌষালী, বারি ফুলকপি-১, ২ ইত্যাদি বিভিন্ন জাতের ফুলকপি পাওয়া যায়। ফুলকপি বপনের উপযুক্ত সময় হল আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর। প্রতি শতকে বীজের পরিমাণ দুই গ্রাম। বীজতলার জন্য ৩ ×১ মিটার মাপের ১৫ সে.মি. উঁচু বেড তৈরি করলে ভাল হয়। বীজতলার উপরের স্তরে ১:১ অনুপাতে পচা গোবর/আবর্জনা সার এবং দো-আঁশ মাটির মিশ্রণ ছড়িয়ে দিতে হবে। এরপর তিন-চার সপ্তাহ পলিথিন দিয়ে মাটি ঢেকে রেখে শোধনের পর পাঁচ সে. মি. দূরে দূরে লাইনে ছিটিয়ে ১০ গ্রাম বীজ বুনতে হবে। অতিবৃষ্টি ও রোদের ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য উপরে পলিথিন বা চাটাইয়ের আচ্ছাদন দিতে হবে। ১০ দিন পর দ্বিতীয় বীজতলায় পাঁচ সে.মি. পর পর সারি করে দুই সে.মি. দূরে দূরে শেষ বিকেলে স্থানানস্তর করতে হবে। দ্বিতীয় বীজতলায় চারা স্থানানস্তরের পাঁচ দিন পর বীজতলার চারায় প্রতি ১০ লিটার পানির সাথে ৩০ গ্রাম সোহাগা মিশিয়ে স্প্রে করা অত্যাবশ্যক।
ভাল বীজ নির্বাচন : প্রতি হেক্টর জমিতে ফুলকপি চাষের জন্য ৩০০-৩৫০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন। ভালোভাবে জমি তৈরি করার পর ১০-১৫ সে.মি. উঁচু পাশাপাশি ২ টি বেডের মাঝখানে ৩০ সে.মি. চওড়া ও ২৫ সেমি গভীর নালা রাখুন।
বীজতলা প্রস্তুতকরণ : ফুলকপির চারা বীজতলায় উৎপাদন করুন। ১×৩ মিটার বীজতলায় সমপরিমাণ বালি, মাটি ও জৈবসার মিশিয়ে ঝুরাঝুরা করে তৈরি করুন। দ্বিতীয় বীজতলায় চারা রোপণের ৭/৮ দিন আগে প্রতি বীজতলায় ১০০ গ্রাম ইউরিয়া, ১৫০ গ্রাম টিএসপি/ ডিএপি ও ১০০ গ্রাম এমওপি সার ভালভাবে মিশিয়ে দিন। চারা ঠিকমত না বাড়লে পরে প্রতি বীজতলায় প্রায় ১০০ গ্রাম পরিমাণ ইউরিয়া সার ছিটিয়ে দিন। বীজ গজানোর ১০-১২ দিন পর গজানো চারা দ্বিতীয় বীজতলায় স্থানান্তর করুন।
বীজতলা পরিচর্চা : ফুলকপি চাষের জন্য ৩০ দিন বয়সের চারা লাগাতে হয়। সারি থেকে সারির দূরত্ব ১২ ইঞ্চি এবং সারিতে গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ১৮ ইঞ্চি হবে। চারা রোপণের সময় সতর্ক থাকুন, যেন শিকড় মুচড়ে বা বেঁকে না যায়। এতে চারার মাটিতে প্রতিষ্ঠা পেতে দেরি হয় ও বাড়ন কমে। রোপণের প্রথম কয়েক দিন প্রখর রোদে যাতে চারা ঝিমিয়ে না যায় তার জন্য কাগজ বা কলার খোল দিয়ে ছায়া দিন।
তথ্যের উৎস : ফুল কপি এর চাষপদ্ধতির তথ্য
ফুল কপি এর চাষপদ্ধতি :
বীজতলা প্রস্তুতকরনঃ ফুলকপির চারা বীজতলায় উৎপাদন করুন। ১ ×৩ মিটার বীজতলায় সমপরিমাণ বালি, মাটি ও জৈবসার মিশিয়ে ঝুরাঝুরা করে তৈরি করুন। দ্বিতীয় বীজতলায় চারা রোপণের ৭/৮ দিন আগে প্রতি বীজতলায় ১০০ গ্রাম ইউরিয়া, ১৫০ গ্রাম টিএসপি/ডিএপি ও ১০০ গ্রাম এমওপি সার ভালভাবে মিশিয়ে দিন। চারা ঠিকমত না বাড়লে পরে প্রতি বীজতলায় প্রায় ১০০ গ্রাম পরিমাণ ইউরিয়া সার ছিটিয়ে দিন। বীজ গজানোর ১০-১২ দিন পর গজানো চারা দ্বিতীয় বীজতলায় স্থানান্তর করুন।
চারা রোপণঃ ফুলকপি চাষের জন্য ৩০ দিন বয়সের চারা লাগাতে হয়। সারি থেকে সারির দূরত্ব ২৪ ইঞ্চি এবং সারিতে গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ১৮ ইঞ্চি হবে। চারা রোপণের সময় সতর্ক থাকুন, যেন শিকড় মুচড়ে বা বেঁকে না যায়। এতে চারার মাটিতে প্রতিষ্ঠা পেতে দেরি হয় ও বাড়ন কমে। রোপণের প্রথম কয়েক দিন প্রখর রোদে যাতে চারা ঝিমিয়ে না যায় তার জন্য কাগজ বা কলার খোল দিয়ে ছায়া দিন।
তথ্যের উৎস : কৃষি প্রযুক্তি হাতবই, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ৬ষ্ঠ সংস্করণ, সেপ্টেম্বর, ২০১৭।
কৃষি প্রযুক্তি হাতবই, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ৬ষ্ঠ সংস্করণ, সেপ্টেম্বর, ২০১৭।
ফুল কপি এর মাটি ও সার ব্যবস্থাপনার তথ্য
মৃত্তিকা : পানি জমেনা এমন উর্বর দোঁয়াশ ও এঁটেল মাটি।
মৃত্তিকা পরীক্ষা গবেষণাগারের ঠিকানা : মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
সার পরিচিতি : সার পরিচিতি বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
ভেজাল সার চেনার উপায় : ভেজাল সার শনাক্তকরণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
ভেজাল সার চেনার উপায় ভিডিও
ফসলের সার সুপারিশ :
সারের নাম |
শতকপ্রতিসার |
হেক্টর প্রতি সার |
কম্পোস্ট |
৬০-৮০ কেজি |
১০ টন |
ইউরিয়া |
১-১.২ কেজি |
২০০ কেজি |
টিএসপি |
০.৬-০.৮ কেজি |
১৫০ কেজি |
পটাশ |
০.৮-১ কেজি |
১৫০ কেজি |
জিপসাম |
৪০০ গ্রাম |
১০০ কেজি |
দস্তা |
৪০ গ্রাম |
১০ কেজি। |
অনলাইন সার সুপারিশ বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
শতক প্রতি সার |
হেক্টর প্রতি সার |
অর্ধেক গোবর, সমুদয় টিএসপি ও অর্ধেক গ্রাম পটাশ সার জমি তৈরির সময় মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে। অবশিষ্ট গোবর চারা রোপণের ৭ দিন পূর্বে মাদায় দিয়ে মিশিয়ে রাখতে হবে। চারা রোপণের ১৫ দিন পর ১ম বার, ৩০-৫০ দিন পর ২য় বার ইউরিয়া ও অবশিষ্ট পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।চারা রোপণের পূর্বে সার দেয়ার পর পানি দিয়ে মাদার মাটি ভালভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। অতঃপর মাটিতে জো এলে ৭-১০ দিন পর চারা রোপণ করতে হবে। |
চারা রোপণের ২০ দিন পর ১ম বার, ৪০ দিন পর ২য় বার ১৬০ কেজি ইউরিয়া ও ১০০ কেজি এমওপি সার দিন।***** ১০কেজি ডিএপি সার ব্যবহার করলে সমপরিমাণ টিএসপি এবং ৪ কেজি ইউরিয়ার ফল পাবেন, তাই সে পরিমাণ ইউরিয়া কম দিন। খেয়াল রাখুন; সকালে শিশির ভেজা পাতায় যেন দানা সার না পড়ে। জমির উর্বরতা, মাটির ধরণ, বা মাটি পরীক্ষা ভেদে সারের মাত্রা কম বেশি করুন।প্রথমে বোরন সার না দিলে পরবর্তীতে ১ম ও ২য় দফায় ইউরিয়া ও এমওপি সার দেয়ার সময় প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০-১৫ গ্রাম বোরিক পাউডার গুলে পাতায় স্প্রে করে দিন। |
তথ্যের উৎস : কৃষি প্রযুক্তি হাতবই, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ৬ষ্ঠ সংস্করণ, সেপ্টেম্বর, ২০১৭।
ফুল কপি এর সেচের তথ্য
সেচ ব্যবস্থাপনা :
১। রোপনের পর প্রথম ৪-৫ দিন একদিন পরপরই সেচ দিতে হবে। পরবর্তীতে ৮-১০ দিন অন্তর বা প্রয়োজন অনুযায়ী সেচ দিলেই চলবে।
২। সেচ পরবর্তী জমিতে “জো” আসলে ফুলকপির স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য মাটি চটা ভেঙ্গে দিতে হবে এবং জমির আগাছা মুক্ত রাখতে হবে।
৩। সারের উপরি প্রয়োগ যথা সময়ে করতে হবে। উল্লেখ্য সারের উপরি প্রয়োগের পর অবশ্যই সেচ দিতে হবে।
৪। পানি সেচ ও নিষ্কাশনের জন্য বেড সর্বদা পরিষ্কার রাখতে হবে।
সেচ ও নিকাশ পদ্ধতি : ফুলকপি গাছের সারির মাঝে সার দেয়ার পর সারির মাঝখানের মাটি তুলে দুপাশ থেকে গাছের গোড়ায় টেনে দিন। এতে সেচ ও নিকাশের সুবিধা হয়। খেয়াল রাখুন জমিতে যেন পানি বেশি সময় ধরে জমে না থাকে।
তথ্যের উৎস : কৃষি প্রযুক্তি হাতবই, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ৬ষ্ঠ সংস্করন, সেপ্টেম্বর, ২০১৭।
ফুল কপি এর আগাছার তথ্য
১) আগাছার নাম : চাপড়া ঘাস
আগাছা জন্মানোর মৌসুম : খরিফে বেশি বাড়ে। মে থেকে জুলাইয়ের মাঝে ফুল ফোটে ও বীজ বাত্তি হয়।
আগাছার ধরন : বহুবর্ষজীবী ঘাসজাতীয় বীরুৎ আগাছা।
প্রতিকারের উপায় : মাটির অগভীরে আগাছার কন্দমূল নিড়ানি,কোদাল,লাঙ্গল দিয়ে ও হাতড়ে তুলে শুকিয়ে মেরে ফেলুন। সেচ ও সার দেবার পর জো আসা মাত্র আগাছা বাছাই।
তথ্যের উৎস : দক্ষিণাঞ্চলের উপযোগী কৃষি প্রযুক্তি, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল।
২) আগাছার নাম : কাঁটানটে
আগাছা জন্মানোর মৌসুম : সারাবছর। রবি
আগাছার ধরন : বিরুৎজাতীয় একবর্ষজীবী আগাছা।
প্রতিকারের উপায় : গভীর চাষ। বাছাই। ফসলের প্রথম ৩০ দিন পর্যন্ত আগাছা মুক্ত রাখুন।
তথ্যের উৎস : দক্ষিণাঞ্চলের উপযোগী কৃষি প্রযুক্তি, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, নভেম্বর, ২০১৩।
৩) আগাছার নাম : বথুয়া
আগাছা জন্মানোর মৌসুম : সারাবছর। রবি
আগাছার ধরন : বিরুৎজাতীয় একবর্ষজীবী আগাছা।
প্রতিকারের উপায় : গভীর চাষ। বাছাই। ফসলের প্রথম ৩০ দিন পর্যন্ত আগাছা মুক্ত রাখুন।
তথ্যের উৎস : দক্ষিণাঞ্চলের উপযোগী কৃষি প্রযুক্তি, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, নভেম্বর, ২০১৩।
৪) আগাছার নাম : দুর্বা
আগাছা জন্মানোর মৌসুম : খরিফে বেশি বাড়ে। খরা সইতে পারে। এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মাঝে ফুল ফোটে ও বীজ বাত্তি হয়। মাঝারি থেকে উঁচু জমিসহ প্রায় সবখানে আকো বা ছায়াতে এর বিচরণ।
আগাছার ধরন : বহুবর্ষজীবী ঘাসজাতীয় বীরুৎ আগাছা।
প্রতিকারের উপায় : মাটির অগভীরে আগাছার কন্দমূল নিড়ানি,কোদাল,লাঙ্গল দিয়ে ও হাতড়ে তুলে শুকিয়ে মেরে ফেলুন। সেচ ও সার দেবার পর জো আসা মাত্র আগাছা বাছাই।
তথ্যের উৎস : দক্ষিণাঞ্চলের উপযোগী কৃষি প্রযুক্তি, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, নভেম্বর, ২০১৩।
ফুল কপি এর আবহাওয়া ও দুর্যোগ তথ্য
তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া
বাংলা মাসের নাম : মাঘ
ইংরেজি মাসের নাম : জানুয়ারী
ফসল ফলনের সময়কাল : রবি
দুর্যোগের নাম : তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া
দুর্যোগ পূর্বপ্রস্তুতি : আবহাওয়ার কারণে ছত্রাক আক্রমণ হতে পারে তাই নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন করতে হবে।
কৃষি আবহাওয়ার তথ্য পেতে ক্লিক করুন
দুর্যোগকালীন/দুর্যোগ পরবর্তী প্রস্তুতি : ছত্রাকের আক্রমণ দেখা দিলে ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন ডাইথেন এম-৪৫) ২০ গ্রাম ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে গাছে স্প্রে করুন।
দুর্যোগ পূর্ববার্তা : বাড়ন্ত ফসল তোলা
প্রস্তুতি : আগাম বা তাপ সহিষ্ণুজাত আবাদ
তথ্যের উৎস : দক্ষিণাঞ্চলের উপযোগী কৃষি প্রযুক্তি, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, নভেম্বর, ২০১৩।
ফুল কপি এর পোকার তথ্য
১) পোকার নাম : ফুলকপির কাটুই পোকা
পোকা চেনার উপায় : মথ মাঝারি আকারের ধুসর রঙের কালসে ছোপ ছোপ ডোরাকাটা। পাখায় হালকা ঝালরের মতো সুক্ষ পশম থাকে। পীঠ বরার লম্বা লম্বি হালকা ধূসর/ কালো চওড়া রেখা আছে। পুত্তলি গাঢ় বাদামি, কাটার মতো অঙ্গ থাকে।
ক্ষতির ধরণ : রাতের বেলা মাটি বরাবর চারার গোড়া কেটে দেয়। সকাল বেলা চারা মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
আক্রমণের পর্যায় : চারা
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : গোঁড়া
পোকার যেসব স্তর ক্ষতি করে : কীড়া
ব্যবস্থাপনা : আক্রমণ বেশি হলে কারটাপ জাতীয় কীটনাশক (কেয়ার ৫০ এসপি অথবা সানটাপ ৫০ এসপি ২০ মিলি / ৪ মূখ) অথবা ল্যামডা-সাইহ্যালোথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (ক্যারাটে ২.৫ ইসি অথবা ফাইটার প্লাস ২.৫ ইসি ১৫ মিলি / ৩ মূখ) ১০ লিটার প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে, ১০ দিন পরপর ২/৩ বার। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বালাইনাশকের বিস্তারিত তথ্যের জন্য ভিজিট করুন
বালাইনাশক ব্যবহারের সতর্কতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
পূর্ব-প্রস্তুতি : গভীর চাষ দিয়ে পোকা পাখিদের খাবার সুযোগ করে দিন, চারা লাগানোর/ বপনের পর প্রতিদিন সকালে জমি পরিদর্শন করুন। পাখি বসার জন্য জমিতে ডালপালা পুতে দিন।
অন্যান্য : সকাল বেলা কেটে ফেলা চারার আশে পাশে মাটি খুড়ে পোকা বের করে মারুন। রাতে আক্রান্ত জমির মাঝে মাঝে আবর্জনা জড়ো করে রাখলে তার নিচে কীড়া এসে জমা হবে, সকালে সেগুলোকে মেরে ফেলুন।
তথ্যের উৎস : সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা ও বিভিন্ন ফসলের ক্ষতিকারক পোকামাকড় দমন, কীটতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। ফসলের বালাই ব্যবস্থাপনা -মোঃ হাসানুর রহমান, দ্বিতীয় সংস্করণ, জানুয়ারী-২০১৩।
২) পোকার নাম : ফুলকপির ফ্লি বিটল পোকা
পোকা চেনার উপায় : ছোট কালো রঙের পোকা
ক্ষতির ধরণ : পাতা ছোট ছোট ছিদ্র করে খায়। আক্রান্ত পাতায় অসংখ্য ছিদ্র হয়।
ক্ষতির লক্ষণ : পাতা ছোট ছোট ছিদ্র করে খায়। আক্রান্ত পাতায় অসংখ্য ছিদ্র হয়।
আক্রমণের পর্যায় : বাড়ন্ত পর্যায়, চারা
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : পাতা
পোকার যেসব স্তর ক্ষতি করে : পূর্ণ বয়স্ক , কীড়া
ব্যবস্থাপনা : সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন ওস্তাদ ২০ মিলিলিটার অথবা ম্যাজিক অথবা কট ১০ মিলিলিটার) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বালাইনাশকের বিস্তারিত তথ্যের জন্য ভিজিট করুন
বালাইনাশক ব্যবহারের সতর্কতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
পূর্ব-প্রস্তুতি : পরিস্কার পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ করুন, জমিতে জৈব সার প্রয়োগ করুন, জমির চার দিকে ফাঁদ ফসল হিসাবে সরিষা চাষ করুন, আক্রান্ত গাছে ছাই ছিটান।
অন্যান্য : হাত জাল দ্বারা পোকা সংগ্রহ করুন। চারা গাছ জাল দিয়ে ঢেকে দিন । ৫০০ গ্রাম নিম বীজের শাঁস পিষে ১০ লিটার পানিতে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে তা ছেঁকে আক্রান্ত ক্ষেতে স্প্রে করুন।
তথ্যের উৎস : সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা ও বিভিন্ন ফসলের ক্ষতিকারক পোকামাকড় দমন, কীটতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। ফসলের বালাই ব্যবস্থাপনা -মোঃ হাসানুর রহমান, দ্বিতীয় সংস্করণ, জানুয়ারী-২০১৩।
৩) পোকার নাম : ফুলকপির সরুই পোকা (ডায়ামন্ড ব্যাক মথ)
পোকা চেনার উপায় : কীরা সবুজ রঙের । বয়স্ক পোকা বাদামী রঙের।
ক্ষতির ধরণ : ডিম থেকে কীড়া বের হয়ে পাতায় একত্রে গাদা করে থাকে এবং পাতার সবুজ অংশ খেয়ে বড় হতে থাকে। এভাবে খাওয়ার ফলে পাতা জালের মত হয়ে যাওয়ায় পাতায় অনেক কীড়া দেখতে পাওয়া যায়। কয়েক দিনের মধ্যে এরা ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ে এবং বড় বড় ছিদ্র করে পাতা খেয়ে ফেলে।
আক্রমণের পর্যায় : সব
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : পাতা
পোকার যেসব স্তর ক্ষতি করে : কীড়া
ব্যবস্থাপনা : সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন ওস্তাদ ২০ মিলিলিটার অথবা ম্যাজিক অথবা কট ১০ মিলিলিটার) অথবা সাইপারমেথ্রিন+ক্লোরোপাইরিফস গ্রুপের কীটনাশক (যেমনঃ ক্লোরসাইরিন ৫৫০ ইসি ১০মিলি) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বালাইনাশকের বিস্তারিত তথ্যের জন্য ভিজিট করুন
বালাইনাশক ব্যবহারের সতর্কতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
পূর্ব-প্রস্তুতি : আগাম বীজ বপন করুন, সুষম সার ব্যবহার করুন, সঠিক দুরত্বে চারা রোপন করুন, কপি ক্ষেতের আশে পাশের কপিজাতীয় আগাছা ধ্বংস করুন।
অন্যান্য : কীড়া সহ গাছ থেকে ছিড়ে নিয়ে পা দিয়ে পিষে বড় কীড়াগুলোকে ধরে ধরে মেরে ফেলুন। চারা লাগানোর এক সপ্তাহের মধ্যেই জমিতে ফেরোমন ফাঁদ পাতুন।
আলোক ফাঁদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
সেক্স ফেরোমন ফাঁদ বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
তথ্যের উৎস : সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা ও বিভিন্ন ফসলের ক্ষতিকারক পোকামাকড় দমন, কীটতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। ফসলের বালাই ব্যবস্থাপনা -মোঃ হাসানুর রহমান, দ্বিতীয় সংস্করণ, জানুয়ারী-২০১৩।
৪) পোকার নাম : কপির মাথা খেকো লেদা পোকা (টোবাকো ক্যাটারপিলার)
পোকা চেনার উপায় : এ পোকার ডিমগুলো গাদা করে ছাদের টাইলসের মত একটির উপর একটি সাজানো থাকে। কীড়ার মাথা লাল এবং হালকা থেকে হলুদাভ সবুজ বর্ণের। শরীরের পিঠের দিকে লম্বালম্বিভাবে সমান্তরাল তিনটি ডোরা দাগ থাকে। শরীরের উভয় পাশে দুটি লম্বালম্বি দাগ থাকে।
ক্ষতির ধরণ : এক সাথে অনেকগুলো কীড়া কপির বর্ধনশীল অংশ খেয়ে ফেলে। ফলে কপির মাথা নষ্ট হয় এবং খাওয়ার অনুপযোগী হয়। পাতার সবুজ অংশ খেয়ে বড় হতে থাকে। এভাবে খাওয়ার ফলে পাতা জালের মত হয়ে যাওয়া পাতায় অনেক কীড়া দেখতে পাওয়া যায়।
ক্ষতির লক্ষণ : এক সাথে অনেকগুলো কীড়া কপির বর্ধনশীল অংশ খেয়ে ফেলে। ফলে কপির মাথা নষ্ট হয় এবং খাওয়ার অনুপযোগী হয়। পাতার সবুজ অংশ খেয়ে বড় হতে থাকে। এভাবে খাওয়ার ফলে পাতা জালের মত হয়ে যাওয়া পাতায় অনেক কীড়া দেখতে পাওয়া যায় ।
আক্রমণের পর্যায় : ফলের বাড়ন্ত পর্যায়
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : ফুল
পোকার যেসব স্তর ক্ষতি করে : কীড়া
ব্যবস্থাপনা : সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন ওস্তাদ ২০ মিলিলিটার অথবা ম্যাজিক অথবা কট ১০ মিলিলিটার) প্রতি ১০লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে, ১০-১২ দিন পরপর ২/৩ বার। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বালাইনাশকের বিস্তারিত তথ্যের জন্য ভিজিট করুন
বালাইনাশক ব্যবহারের সতর্কতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
পূর্ব-প্রস্তুতি : আগাম বীজ বপন করুন, সুষম সার ব্যবহার করুন, সঠিক দুরত্বে চারা রোপন করুন, চারা লাগানোর এক সপ্তাহের মধ্যেই জমিতে ফেরোমন ফাঁদ পাতুন। বড় কীড়া গুলোকে ধরে ধরে মেরে ফেলুন।
সেক্স ফেরোমন ফাঁদ বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
তথ্যের উৎস : সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা ও বিভিন্ন ফসলের ক্ষতিকারক পোকামাকড় দমন, কীটতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। ফসলের বালাই ব্যবস্থাপনা –মোঃ হাসানুর রহমান, দ্বিতীয় সংস্করণ, জানুয়ারী-২০১৩।
ফুল কপি এর রোগের তথ্য
১) রোগের নাম : কার্ড পচা রোগ
রোগের স্থানীয় নাম : নেই
রোগের কারণ : ফিউজারিয়াম ইকোইজিটি ও অল্টার্নেরিয়া প্রজাতির ছত্রাক এবং আরউইনিইয়া কেরোটোভোরা নামক ব্যাকটেরিয়া সম্মিলিতভাবে সৃষ্টি করে।
ক্ষতির ধরণ : এ রোগের কারণে ফুলকপির সব ফুল নষ্ট হয়ে যায় বা খাওয়ার অনুপোযোগী হয়ে যায়। ফুলকপির কার্ডে প্রথমে বাদামি রঙের গোলাকৃতি দাগ দেখা যায় পরে একাধিক দাগ মিশে বড় দাগ সৃষ্টি করে। ব্যাকটেরিয়া আক্রমণে কার্ডে দ্রুত পচন ধরে নষ্ট হয়ে যায়। আক্রান্ত মাথা খাওয়ার অযোগ্য হয়ে যায়।
ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : ফুল অবস্থায়
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : ফুল , কান্ডের গোঁড়ায়
ব্যবস্থাপনা : কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রানাশক যেমন (এমকোজিম ৫০; অথবা গোল্ডাজিম ৫০০ ইসি ১০ মিলি /২ মুখ ) ১০ লি পানিতে মিশিয়ে ৭ দিন পরপর ৩ বার গাছের গোড়ায় ও মাটিতে স্প্রে করুন অথবা ১০ লিটার পানিতে কপার অক্সিকোরাইড ৪০ গ্রাম + স্ট্রেপটোমাইসিন ১ গ্রাম মিশিয়ে ৭ দিন পর পর দু-তিনবার স্প্রে করুন। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বালাইনাশকের বিস্তারিত তথ্যের জন্য ভিজিট করুন
বালাইনাশক ব্যবহারের সতর্কতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
পূর্ব-প্রস্তুতি : একই জমিতে বার বার কপিজাতীয় ফসল চাষ করবেন না। আক্রান্ত ক্ষেতে থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন না। লাল মাটি বা অম্লীয় মাটির ক্ষেত্রে শতাংশ প্রতি চার কেজি হারে ডলোচুন প্রয়োগ করুন (প্রতি তিন বছরে একবার) বপনের আগে প্রতি কেজি বীজে ২-৩ গ্রাম প্রোভ্যাক্স বা কার্বেন্ডাজিম মিশিয়ে বীজ শোধন করে নিন।
বীজ শোধন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
তথ্যের উৎস : কৃষি প্রযুক্তি হাতবই, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ৬ষ্ঠ সংস্করন, সেপ্টেম্বর, ২০১৭। ফসলের বালাই ব্যবস্থাপনা, মোঃ হাসানুর রহমান, দ্বিতীয় সংস্করণ, জানুয়ারী ২০১৩।
২)রোগের নাম : ফুলকপির ব্লাক রট রোগ
রোগের স্থানীয় নাম : নেই
রোগের কারণ : ছত্রাক
ক্ষতির ধরণ : আক্রান্ত পাতায় হালকা বাদামী থেকে ধুসর ছাই রংগের দাগ দেখা যায়। ধীরে ধীরে দাগ বড় হয় ও মধ্যশিরার দিকে অগ্রসর হলে অনেকটা ইংরেজি "V" অক্ষরের মত আকার ধারণ করে। দাগের কিনারা হলদে থাকে।
ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : বাড়ন্ত পর্যায়
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : পাতা
ব্যবস্থাপনা : ম্যানকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক যেমন (রিডোমিল গোল্ড ২০ গ্রাম) ১০ লি. পানিতে মিশিয়ে ৭ দিন পরপর ৩ বার গাছের গোড়ায় ও মাটিতে স্প্রে করুন। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বালাইনাশকের বিস্তারিত তথ্যের জন্য ভিজিট করুন
বালাইনাশক ব্যবহারের সতর্কতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
পূর্ব-প্রস্তুতি : রোগমুক্ত বীজ বা চারা ব্যবহার করুন। বপনের পূর্বে ৫০ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রার গরম পানিতে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে বীজ শোধন করুন। একই জমিতে বার বার বাঙ্গি বা কুমড়া বা কপিজাতীয় ফসল চাষ করবেন না। লাল মাটি বা অম্লীয় মাটির ক্ষেত্রে শতাংশ প্রতি চার কেজি হারে ডলোচুন প্রয়োগ করুন (প্রতি তিন বছরে একবার)।
বীজ শোধন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
তথ্যের উৎস : সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা ও বিভিন্ন ফসলের ক্ষতিকারক পোকামাকড় দমন, কীটতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। ফসলের বালাই ব্যবস্থাপনা -মোঃ হাসানুর রহমান, দ্বিতীয় সংস্করণ, জানুয়ারী-২০১৩।
৩) রোগের নাম : ফুলকপির ইয়োলো ভাইরাস রোগ
রোগের স্থানীয় নাম : নেই
রোগের কারণ : ভাইরাস
ক্ষতির ধরণ : পাতা হলুদ হয়ে যায়। অধিক আক্রমণে গাছে ফল ধরে না।
ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : বাড়ন্ত পর্যায় , চারা
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : পাতা
ব্যবস্থাপনা : আক্রান্ত গাছ তুলে নষ্ট করুন, বাহক পোকা ধ্বংস করুন। ফসল সংগ্রহের পর অবশিষ্ট অংশ ধ্বংস করুন।
বালাইনাশকের বিস্তারিত তথ্যের জন্য ভিজিট করুন
বালাইনাশক ব্যবহারের সতর্কতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
পূর্ব-প্রস্তুতি : জমি পরিস্কার/পরিচ্ছন্ন রাখুন। ব্যবহৃত কৃষি যন্ত্রপাতি জীবানুমুক্ত রাখুন, আক্রান্ত গাছ অপসারণ করুন।একই জমিতে বার বার কপি জাতীয় ফসল চাষ করবেন না, আগাম বীজ বপন করুন। সুষম সার ব্যবহার করুন।
তথ্যের উৎস : সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা ও বিভিন্ন ফসলের ক্ষতিকারক পোকামাকড় দমন, কীটতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। ফসলের বালাই ব্যবস্থাপনা -মোঃ হাসানুর রহমান, দ্বিতীয় সংস্করণ, জানুয়ারী-২০১৩।
৪) রোগের নাম : ফুলকপির গোড়া পচা রোগ
রোগের স্থানীয় নাম : নেই
রোগের কারণ : ছত্রাক
ক্ষতির ধরণ : চারার গোড়া বা শিকড় পচে ঢলে পড়ার মাধ্যমে এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। আক্রান্ত চারার গোড়ার চারদিকে বাদামি বর্ণের পানিভেজা দাগ দেখা যায়। আক্রমণের দুই দিনের মধ্যে চারা গাছটি ঢলে পড়ে ও আক্রান্ত অংশে তুলার মতো সাদা মাইসেলিয়াম দেখা যায় ও অনেক সময় সরিষার মত ছত্রাকের অনুবীজ পাওয়া যায়। চারা টান দিলে সহজে মাটি থেকে উঠে আসে।
ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে :বাড়ন্ত পর্যায় , চারা
ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : শিকড় , গোঁড়া
ব্যবস্থাপনা :কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রানাশক যেমন (এমকোজিম ৫০ অথবা গোল্ডাজিম ৫০০ ইসি ১০ মিঃলিঃ/ ২ মুখ) ১০লি পানিতে মিশিয়ে ৭ দিন পরপর ৩ বার গাছের গোড়ায় ও মাটিতে স্প্রে করুন। আক্রমণ বেশি হলে প্রথম থেকে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম রোভরাল মিশিয়ে স্প্রে করুন। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বালাইনাশকের বিস্তারিত তথ্যের জন্য ভিজিট করুন
বালাইনাশক ব্যবহারের সতর্কতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
পূর্ব-প্রস্তুতি : একই জমিতে বার বার কপিজাতীয় ফসল চাষ করবেন না। দিনের বেশির ভাগ সময় ছায়া পড়ে এমন জমিতে কপিজাতীয় ফসল চাষ করবেন না। পরিমিত সেচ ও পর্যাপ্ত জৈব সার প্রদান করুন। পানি নিস্কাশনের ভাল ব্যবস্থা রাখুন। সরিষার খৈল ৩০০ কেজি/ হেঃ হারে জমিতে প্রয়োগ করা। লাল মাটি বা অম্লীয় মাটির ক্ষেত্রে শতাংশ প্রতি চার কেজি হারে ডলোচুন প্রয়োগ করুন (প্রতি তিন বছরে একবার)। বপনের আগে প্রতি কেজি বীজে ২-৩ গ্রাম প্রোভ্যাক্স বা কার্বেন্ডাজিম মিশিয়ে বীজ শোধন করে নিন।
অনলাইন সার সুপারিশ বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
বীজ শোধন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
তথ্যের উৎস : সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা ও বিভিন্ন ফসলের ক্ষতিকারক পোকামাকড় দমন, কীটতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। ফসলের বালাই ব্যবস্থাপনা -মোঃ হাসানুর রহমান, দ্বিতীয় সংস্করণ, জানুয়ারী-২০১৩।
ফুল কপি এর ফসল তোলা এবং সংরক্ষণের তথ্য
ফসল তোলা : ফুল ফোটা শুরু হওয়ার আগেই ফুলকপি বেশ দৃঢ় থাকা অবস্থায় তা সংগ্রহ করা উচিত। অন্যথায় কপি ফেটে যেতে পরে কিংবা রঙ খারাপ হয়ে যেতে পারে। রোপণের প্রায় ৪৫-৬০ দিনের মধ্যে গাছে ফুল দেখা দেয়। পুস্পমঞ্জুরি দেখা দেয়ার ২ সপ্তাহের মধ্যে ফুলকপি খাওয়ার উপযুক্ত হয়।
সংরক্ষণ : ছায়ায় সংরক্ষণ করুন। মাঝে মাঝে পানি ছিটিয়ে দিন। বেশি দিন সংরক্ষণ এর জন্য হিমাগারে রাখুন। জমি থেকে তোলার প্রায় সপ্তাহখানেক আগে নেপথলিন এসেটিক এসিড ছিঁটিয়ে পরে ঠান্ডা পরিবেশে দেড় মাস পর্যন্ত ফুলকপি অবিকৃত রাখা যায়।
তথ্যের উৎস : কৃষি প্রযুক্তি হাতবই, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ৬ষ্ঠ সংস্করন, সেপ্টেম্বর, ২০১৭।
ফুল কপি এর বীজ উৎপাদন এবং সংরক্ষণের তথ্য
ফসল : ফুল কপি
বীজ উৎপাদন : রোপণের প্রায় দু’মাসের মধ্যে গাছে ফুল দেখা দেয়। শতকরা ৭০-৭৫ ভাগ ফল বা পড হলুদ অথবা বাদামী রঙ হলে বীজ সংগ্রহের জন্য ফসল কেটে নিতে হবে। পরিপক্ক ফলসহ গাছ সংগ্রহ করে ছায়াযুক্ত স্থানে গাদা করে রাখতে হবে। ২-৩ দিন পর ফলসহ ডাঁটাগুলো উপর নিচ করে আরো ৩-৪ দিন গাদা করে রাখতে হবে।
বীজ সংরক্ষণ: ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে হালকাভাবে মাড়াই করে কুলা দিয়ে ঝেড়ে বীজ সংগ্রহ করতে হবে। জোগাড় করা বীজ ২-৩ দিন রোদে শুকিয়ে বায়ুরোধী পলিথিন ব্যাগে সিল করে টিন বা প্লাস্টিকের পাত্রে বা কাঁচের বৈয়মে ভরে শুকনো জায়গায় সংরক্ষণ করতে হবে।
তথ্যের উৎস : কৃষি প্রযুক্তি হাতবই, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ৬ষ্ঠ সংস্করন, সেপ্টেম্বর, ২০১৭।
ফুল কপি এর কৃষি উপকরণ
বীজপ্রাপ্তি স্থান : বীজ নিকটস্থ কোম্পানির ডিলার/ বিশ্বস্ত বীজ ব্যবসায়ী ও বিশ্বস্ত বীজ উৎপাদনকারীর (বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর নিকটস্থ কেন্দ্র) নিকট থেকে সংগ্রহ করুন।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) বীজ বিক্রয়কেন্দ্রের তথ্য পেতে ক্লিক করুন
সার ও বালাইনাশক প্রাপ্তিস্থান : বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) ও সরকার অনুমোদিত সার ও বালাইনাশক ডিলার।
সার ডিলার এর বিস্তারিত তথ্য পেতে ক্লিক করুন
তথ্যের উৎস : কৃষি প্রযুক্তি হাতবই, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ৬ষ্ঠ সংস্করন, সেপ্টেম্বর, ২০১৭।
ফুল কপি এর খামার যন্ত্রপাতির তথ্য
যন্ত্রের নাম : কোদাল
ফসল : ফুল কপি
যন্ত্রের ধরন : অন্যান্য
যন্ত্রের ক্ষমতা : হস্ত চালিত/কায়িক শ্রম
যন্ত্রের উপকারিতা : গাছের গোড়ায় মাটি তোলা/আইল ছাঁটা, সেচ ও নিকাশ নালা তৈরি। কম জমির জন্য ফসল তোলা ও পরিচর্যা ব্যবহার হয়।
যন্ত্রের বৈশিষ্ট্য : সাশ্রয়ী মূল্য, সহজ প্রাপ্য ও সহজে বহন যেগ্য।
রক্ষণাবেক্ষণ : ব্যবহারের পর মাটি ও পানি থেকে পরিষ্কার করে রাখুন।
তথ্যের উৎস : বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট অ্যাপস, খামার যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে ফসল উপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প- ডিএই ও সংগ্রহ।
যন্ত্রের নাম : সেচযন্ত্র/এস টি / স্প্রিংকলার
ফসল : ফুল কপি
যন্ত্রের ধরন : সেচ
যন্ত্রের পরিচালনা পদ্ধতি : ডিজেল চালিত
যন্ত্রের ক্ষমতা : অশ্ব শক্তি ১-২।
যন্ত্রের উপকারিতা : শ্রম সাশ্রয়ী। কম জমির জন্য ।
যন্ত্রের বৈশিষ্ট্য : পরিচালনা সহজ ।
রক্ষণাবেক্ষণ : ব্যবহারের পরে পরিষ্কার করে রাখুন। প্রয়োজনে অভিজ্ঞ মেকানিক দিয়ে যন্ত্র পরবর্তী কাজের জন্য মেরামত করে নিন।।
তথ্যের উৎস : বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট অ্যাপস, খামার যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে ফসল উপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প- ডিএই ও সংগ্রহ।
ফুল কপি এর বাজারজাত করণের তথ্য
ফসল : ফুল কপি
প্রথাগত ফসল পরিবহন ব্যবস্থা : স্থানীয়ভাবে বাশের ঝুড়ি, চটের বস্তা, ঠেলাগাড়ি, এবং রিক্সা ভ্যানে পরিবহন করুন।
আধুনিক ফসল পরিবহন ব্যবস্থা : প্লাস্তিকের ঝুড়ি, ছিদ্রযুক্ত চটের বস্তা, ঝুড়ি, করোগেটেড বক্স, প্লাষ্টিক কনটেইনারের মাধ্যমে পিকআপ, ট্রাক, কার্ভাড ভ্যানে পরিবহণ করুন।
প্রথাগত বাজারজাত করণ : স্থানীয় বাজারে খুচরা/ পাইকাড়ি বিক্রয়।
আধুনিক পদ্ধতিতে বাজারজাত করণ : প্রকিয়াজাত করে আড়ৎদারের মাধ্যমে হিমযুক্ত কার্ভাড ভ্যানে দূরবর্তী বাজার, সুপার মার্কেট, ও বিদেশে বিপণন করুন।
ফসল বাজারজাতকরনের বিস্তারিত তথ্য পেতে ক্লিক করুন
তথ্যের উৎস : কৃষি প্রযুক্তি হাতবই, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ৬ষ্ঠ সংস্করণ, সেপ্টেম্বর, ২০১৭।