এক নজরে পাট চাষ

উন্নত জাতঃ ডি-১৫৪-২, বিজেআরআই দেশী পাট-৫(বিজেসি-৭৩৭০), বিজেআরআই দেশী-৬(বিজেসি-৮৩), বিজেআরআই দেশী পাট-৭(বিজেসি-২১৪২), বিজেআরআই দেশী পাট-৮(বিজেসি-২১৯৭), সি ভি এল-১, সি ভি ই-৩, সি সি-৪৫, বিনা দেশী পাট-২, এটম পাট-৩৮, ও-৪, ও-৯৮৯৭, ও এম-১, বিজেআরআই তোষা পাট-৪ (ও-৭২), বিজেআরআই তোষা পাট-৫(ও-৭৯৫), বিজেআরআই তোষা পাট-৬(ও-৩৮২০) খরিফ-১ মৌসুমে চাষ উপযোগী

পুষ্টিগুনঃ ১০০ গ্রাম পাট শাকে শক্তি ৭৩ (কিলোক্যালরি), আমিষ ৩.৬ (গ্রাম), লিপিড ০.৬ (গ্রাম), ক্যালসিয়াম ২৯৮ (মিঃ গ্রাম), লৌহ ১১ (মিঃ গ্রাম), ক্যারেটিন ৬৪০০(মিঃ গ্রাম), ভিটামিন সি ৬৪ ( মিঃ গ্রাম)।

বপনের সময়ঃ ১৫ মার্চ-৩০ এপ্রিল (১ চৈত্র- ১ বৈশাখ ) উপযুক্ত সময়

চাষপদ্ধতি: মাটির প্রকার ভেদে ৪-৬ টি চাষ ও মই দিতে হবে । প্রথম চাষ গভীর হওয়া দরকার । বেড ও নালা পদ্ধতিতে গাজর চাষ করুন এতে সেচ ও নিষ্কাশন সুবিধাজনক, পরিচর্যা সহজ, এবং সেচের পানির অপচয় কম হয়সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। সরাসরি বীজ বুনলে, লাইন থেকে লাইন -১০ ইঞ্চি এবং চারা থেকে চারা ৩-৭ ইঞ্চি দূরে লাগাতে হবে

বীজের পরিমানঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ছিটিয়েঃ ২৫-৩৫গ্রাম, লাইনে ২০-২৫ গ্রাম

সারব্যবস্থাপনাঃ

সারের নাম

সারের পরিমাণ (কেজি/একর)

জৈব সার

২-৪ টন

ইউরিয়া

৬৮-১০১ কেজি

টি এস পি

৪০-৬০ কেজি

এম পি

৪০-৪৮ কেজি

জিপসাম

২০-৩২ কেজি

দস্তা

১.৬-২.৮০ কেজি

অনুমোদিত ডলোচুন (অম্ল মাটির জন্য)

১৬১-২৮৩ কেজি

 

সার প্রয়োগের পদ্ধতিঃ

ইউরিয়া বাদে বাকি সব সার জমি তৈরির সময় মাটিতে মিশিয়ে দিন। বপনের দিন ইউরিয়া ৮ ভাগের ১ ভাগ এবং ৬ সপ্তাহ পরে বাকি ইউরিয়া প্রয়োগ করবেন।

ফসলের সার সুপারিশ (জাত ভিত্তিক) (কেজি/হেক্টর) দেয়া হল

জাতের নাম

 

সারের পরিমাপ

ইউরিয়া

টি এস পি

এম পি

জিপসাম

জিংক

ডি ১৫৪, সিভিএল-১,সিভিই-৩, সিসি-৪৫, ও-৪

১৬৬ কেজি

২৫ কেজি

৩০ কেজি

৪৫ কেজি

১১ কেজি

ও-৯৮৯৭

২০০ কেজি

৫০ কেজি

৬০ কেজি

৬০ কেজি

১১ কেজি

ওএম-১

১৭৬ কেজি

৫০ কেজি

৪০ কেজি

৯৫ কেজি

১১ কেজি

বিজেআরআই দেশী পাট-৫

১১০ কেজি

২৫ কেজি

৪০ কেজি

 

 

বিজেআরআই দেশী পাট-৬ (বিজেসি-৮৩)

২২০ কেজি

৫০ কেজি

৪০ কেজি

 

 

বিজেআরআই দেশী পাট-৭

২২০ কেজি

৫০ কেজি

৪০ কেজি

 

 

বিজেআরআই দেশী পাট-৮

১৬৬ কেজি

২৫ কেজি

৩০ কেজি

৪৫ কেজি

১১ কেজি

ও-৭২

১৬৭ কেজি

৫০ কেজি

৮০ কেজি

১০০ কেজি

 

বিনা পাট- ২, এটম পাট- ৩৮

১০০-২০০ কেজি

৭০-৯০ কেজি

৮০-১২০ কেজি

৫০-৬০ কেজি

 

সার প্রয়োগের পদ্ধতিঃ

ইউরিয়া বাদে বাকি সব সার জমি তৈরির সময় মাটিতে মিশিয়ে দিন। বপনের দিন ইউরিয়া ৮ ভাগের ১ ভাগ এবং ৬ সপ্তাহ পরে বাকি ইউরিয়া প্রয়োগ করবেন।

পোকামাকড়ঃ

  • পাটের বিছা/শুয়োপোকা দমনে কার্বারিল জাতীয় কীটনাশক (যেমন ভিটাব্রিল ৮৫ ডব্লিউপি) অথবা সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন কট ১০ইসি) ১০ মিলিলিটার প্রতি ১০লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০-১২ দিন পরপর ২/৩ বার।
  • ঘোড়া/ছটকা পোকা দমনে হেয়াজিনন/ডায়াজিনন জাতীয় কীটনাশক (যেমন সারবিয়ন ৬০ইসি ৩০ মিলি) অথবা সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক (যেমন রিপকর্ড১০ইসি ২০মিলি) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
  • উড়চুঙ্গা পোকা দমনে ফিপ্রোনিল/ক্লোরপাইরিফস জাতীয় কীটনাশক (যেমন রিজেন্ট ১০-১৫মিলি) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে
  • পাটের কাটুইপোকা দমনে ইমিডাক্লোরোপ্রিড জাতীয় কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ৭-১০ মিলিলিটার / ২মুখ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে ১০ দিন পরপর ২/৩ বার।
  • চেলে পোকা দমনে কার্বারিল জাতীয় কীটনাশক (যেমন: সেভিন ৩০ গ্রাম ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে) অথবা ডায়াজিনন জাতীয় কীটনাশক (যেমন: সার্বিয়ন ৬০ ইসি ৩০ মিলিলিটার প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে) স্প্রে করতে হবে ।
  • কাতরি পোকা দমনে ক্লোরপাইরিফস জাতীয় কীটনাশক (যেমন: ডার্সবান ২০ ইসি ১৫ মিলিলিটার প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে) ১০ দিন পরপর ২-৩ বার স্প্রে করুন।

রোগবালাইঃ

  • পাটের কালোপট্টি, কান্ডপচ্‌ এন্থ্রাকনোজ/শুকনোক্ষত, আগা শুকিয়ে যাওয়া রোগ দমনে মেনকোজেব জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন- ডাইথেন এম৪৫ অথবা ম্যানার এম৪৫ ২০গ্রাম) অথবা সালফার জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন- কুমুলাস ৪০গ্রাম অথবা গেইভেট ২০গ্রাম) প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১২-১৫দিন পরপর ২-৩বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবে
  • পাটের শিকড়ে গিট রোগ দমনের জন্য কার্বোফুরান জাতীয় ঔষধ (যেমনঃ ফুরাডান ৫ জি প্রতি বিঘায় ২ কেজি করে) প্রয়োগ করুন এবং এরপর নিড়ানী দিন ও চূড়ান্ত ভাবে গাছ পাতলা করে দিন
  • পাটের গোড়াপচা রোগ দমনে কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন- গোল্ডাজিম অথবা এইমকোজিম ২০ গ্রাম) প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে ১২-১৫ দিন পর পর ২-৩ বার ভালভাবে স্প্রে করতে হবেঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে
  • পাতার হলদেছিটা বা মোজাইক রোগদমনে জমিতে সাদা মাছি, জাব পোকা দেখা গেলে (বাহক পোকা) ইমিডাক্লোরোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ১০ মি.লি. ২ মুখ ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে সকাল বেলা গাছে ছাই ছিটিয়ে দিলে এই পোকা গাছ থেকে পড়ে যাবে৷ ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে

সতর্কতাঃ বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুনব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুনব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবেনাবালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুনবালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে সাত থেকে ১৫দিন পর বাজারজাত করুন

আগাছাঃ আগাছা দমনের জন্য জমি চাষ ও মই দিয়ে ভালোভাবে আগাছা পরিষ্কার, বিশুদ্ধ বীজ ব্যবহার এবং পরিষ্কার কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার ফসল বোনার ২৫-৩০দিনের মধ্যে আগাছা বাছাই করতে হবেসেচ দেয়ার আগে আগাছা বাছাই করতে হবে

সেচঃ এ ফসলে সাধারণত সেচের প্রয়োজন হয় না তবে বীজ বপনের আগে অতিমাত্রায় খরা হলে হালকা সেচ দিয়ে জো এনে বীজ বপন করা যায় চারা গজানোর পর ৩-৪ পাতা হলে যদি অতিমাত্রায় খরা দেখা দেয় প্রয়োজনে সম্পূরক সেচ দেয়া যেতে পারে

আবহাওয়া দুর্যোগঃ খরা দেখা দিলে জমিতে প্রয়োজনীয় সেচের ব্যবস্থা করা বন্যাপ্রবণ নিচু এলাকা পানিতে আগে ডুবে যায় এজন্য এসব এলাকায় দেশি ও আগাম জাতের পাট চাষ করতে হবে যাতে বন্যা আসার আগেই ফসল ঘরে তোলা যায়

ফলনঃ জাত ভেদে শতক প্রতি ফলন ৮-১২কেজি

সংরক্ষনঃ আশঁ রোদে শুকিয়ে ঠাণ্ডা করে মাচা বা গুদামে রাখতে হবে