এক নজরে সরিষা চাষ
পুষ্টিগুনঃ প্রতি ১০০ গ্রাম সরিষায় খাদ্যশক্তি রয়েছে ৬৬ ক্যালরি,শর্করা ৭.৭৮ গ্রাম, আমিষ ৩.৯৫ গ্রাম, খাদ্য আঁশ ৩.২ গ্রাম,সোডিয়াম ১১২০ মিগ্রা,পটাশিয়াম ১৫১ মিগ্রা,ক্যালসিয়াম ৮%, আইরন ১০% ইত্যাদি।
উন্নত জাতঃ টরি-৭,বারি সরিষা-৯,বারি সরিষা-১৪,বারি সরিষা-১৫,বারি সরিষা-১৭,টিএস-৭২,রাই-৫,বারি সরিষা-৬,বারি সরিষা-৭,বারি সরিষা-৮,বারি সরিষা-১২,বারি সরিষা-১৩,এসএস-৭৫,আরএস-৮১,বারি সরিষা- ১০,বারি সরিষা-১১,বারি সরিষা-১৬,বিনা সরিষা-২,বিনা সরিষা-৩,বিনা সরিষা-৪,বিনা সরিষা-৫,বিনা সরিষা-৯,বিনা সরিষা-১০,বিনা সরিষা ১,বিনা সরিষা ৬,বিনা সরিষা-৭, বিনা সরিষা-৮ ইত্যাদি কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কয়েকটি জাত।
বপনের সময়ঃ মধ্য আশ্বিন থেকে মধ্য কার্তিক(মধ্য অক্টোবর থেকে মধ্য নভেম্বর)।
চাষপদ্ধতিঃ জমির প্রকারভেদে ৪-৫ টি আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে জমি তৈরি করতে হবে । সরিষা বীজ ছিটিয়ে ও সারিতে উভয় পদ্ধতিতেই বপন করা যায়। সারিতে বুনলে সার ছিটানো, নিড়ানী দেয়া ও সেচ প্রদানে সুবিধা হয়। সারি থেকে সারির দূরত্ব হবে ১২ ইঞ্চি ।
বীজের পরিমানঃ জাত ভেদে বীজের পরিমান শতক প্রতি ২৫-৩০ গ্রাম।
সার ব্যবস্থাপনাঃ
সারের নাম |
সারের পরিমাণ / শতক |
প্রয়োগ পদ্ধতি |
|
|
সোনালী সরিষা, বারি সরিষা-৬, বারি সরিষা ৭, বারি সরিষা ৮, বারি সরিষা ১১, বারি সরিষা ১৩, বারি সরিষা ১৪, বারি সরিষা ১৫ ও বারি সরিষা ১৬ ইত্যাদি জাতের জন্য- |
টরি ৭, কল্যাণীয়া, রাই-৫, দৌলত, বারি সরিষা ৯, বারি সরিষা ১২ ইত্যাদি জাতের জন্য- |
|
ইউরিয়া
|
১.০ – ১.২০ কেজি |
৮১০ গ্রাম – ১.০ কেজি |
সেচবিহীন চাষে সমুদয় সার একসাথে প্রয়োগ করতে হবে। সেচের ব্যবস্থা থাকলে অর্ধেক ইউরিয়া ও সমুদয় টিএসপি ও পটাশ সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। বাকী ইউরিয়া সার ৩৫-৪০ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে। |
টিএসপি |
৬৯০-৭৩০ গ্রাম |
৬১০-৬৯০ গ্রাম |
|
এমওপি |
৩৪০-৪০০ গ্রাম |
২৮০-৩৪০ গ্রাম |
|
জিপসাম |
৬১০-৭৩০ গ্রাম |
৪৯০-৬১০ গ্রাম |
|
দস্তা |
২০ গ্রাম |
২০ গ্রাম |
|
বরিক এসিড |
৪০-৬০ গ্রাম |
৪০-৬০ গ্রাম |
|
পচা গোবর |
৩২-৪০ কেজি |
৩২-৪০ কেজি |
পোকামাকড়ঃ
রোগবালাইঃ
সতর্কতাঃ বালাইনাশক/কীটনাশক ব্যবহারের আগে বোতল বা প্যাকেটের গায়ের লেবেল ভালো করে পড়ুন এবং নির্দেশাবলি মেনে চলুন। ব্যবহারের সময় নিরাপত্তা পোষাক পরিধান করুন। ব্যবহারের সময় ধূমপান এবং পানাহার করা যাবেনা। বালাইনাশক ছিটানো জমির পানি যাতে মুক্ত জলাশয়ে না মেশে তা লক্ষ্য রাখুন। বালাইনাশক প্রয়োগ করা জমির ফসল কমপক্ষে সাত থেকে ১৫দিন পর বাজারজাত করুন।
আগাছাঃ জমি নিয়মিত জমি পর্যবেক্ষণ করুন। সেচ ও সার দেবার পর জো আসা মাত্র নিড়িয়ে আগাছা বাছাই ।চারা অবস্থা থেকে কন্দ গঠনের পূর্ব পর্যন্ত ২ থেকে ৩ বার নিড়ানি দিয়ে জমির আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হবে। নিড়ানি দেয়ার সময় গাছের শিকড়ের কোনো ক্ষতি করা যাবে না।
সেচঃ বীজ বোনার ২০-২৫ দিন পর/ ফুল আসার আগে এবং ৫০-৫৫ দিল পর/ ফল ধরার সময় জমিতে সেচ দিন। তবে জমিতে রসের অভাব হলে প্রয়োজনে বীজ বোনার ১০-১৫ দিন পর হালকা সেচ দিয়ে নিড়ানি দিন। জমিতে বৃষ্টি বা সেচের পানি ৩০ মিনিটের বেশি সময় পর পানি জমে না থাকে । নালা তৈরি করে তাড়াতাড়ি পানি সরানোর ব্যবস্থা নিন।
আবহাওয়া ও দুর্যোগঃ তাড়াতাড়ি অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি বের করার ব্যবস্থা করুন। হেলে পড়া গাছ সোজা করে নিন। প্রয়োজনে কয়েকটি গাছ একত্রে বেঁধে দিন।
ফলনঃ জাতভেদে শতক প্রতি ফলন ৪-১০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।
সংগ্রহঃ টরী জাতীয় সরিষা ৭০-৯০ দিন এবং রাই জাতীয় সরিষা ৯০-১২০ দিনের ৭০-৮০% ফল / শুঁটি পরিপক্ক হলে শুটিসহ গাছ খড়ের রং ধারণ করে। এ সময় গাছ কেটে ফসল সংগ্রহ করুন।
সংরক্ষনঃ রোদে শুকানোর পর গরম অবস্থা বীজ সংরক্ষণ করলে অংকুরোদগম ক্ষমতা কমে যেতে পারে। তাই রোদে শুকানো বীজ ঠান্ডা বায়ুরোধী পাত্রে, টিনে বা ড্রামে পুরাপুরি ভরে মুখ বায়ুরোধী করে বন্ধ করুন। ইদানিং ভারি পলি ব্যাগে বীজ ভরে তা চটের বস্তায় ঢুকিয়ে রাখা সাশ্রয়ী প্রযুক্তি। বীজপাত্র অপূর্ণ থাকলে বা পাত্রের মুখ ভালভাবে না আঁটকালে বীজের গজানোর হার কমে যাবে।পাত্রের মুখে ও গায়ে লেবেল বা বীজের বিবরণ লিখে/ চিহ্ন দিয়ে রাখুন। সংরক্ষণের জন্য বীজ ভর্তি পাত্র মাটির সংস্পর্শে না রেখে মাচার উপর রাখুন। বীজপাত্র কম আর্দ্র ঘরের শীতল স্থানে রাখুন।