লাউ এর বীজ ও বীজতলার তথ্য

ফসল : লাউ

বর্ণনা : লাউ এর চারা বীজতলার বেডে অথবা পলিথিনে তৈরি করা যায়, অথবা সরাসরি মুল জমিতে মাদায় বপন করা যায়।

ভাল বীজ নির্বাচন :

ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির মূল উপকরণই হচ্ছে উন্নতমানের বীজ। ভালো বীজ বিজাতমুক্ত, আগাছা বীজমুক্ত, রোগ ও পোকামাকড়মুক্ত, অপদ্রব্যমুক্ত, পরিপক্ব ও পুষ্ট, সমআকার, চকচকে, সঠিক আর্দ্রতাযুক্ত (১২%), অংকুরোদগম ক্ষমতা বা গজানোর হার কমপক্ষে ৮০% এবং বিশুদ্ধতা হার কমপক্ষে ৯৫-৯৯%। বর্তমানে বাজার থেকে প্যাকেট বীজ কেনা যায়। তবে বীজের প্যাকেটে লাগানো ট্যাগ ও লেবেলিং এ উল্লিখিত বীজ গজানোর হার ও বিশুদ্ধতার হার দেখে কিনতে হবে। বপনের জন্য রোগমুক্ত, পরিষ্কার, পরিপুষ্ট বীজ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কারণ ভাল বীজ মানে সবল চারা। আর রোগাক্রান্ত চিটা থেকে বীজতলায় সহজেই রোগ ছড়ায়। তাই মানসম্পন্ন বীজ ব্যবহারের লক্ষ্যে ভালভাবে বীজ বাছাইয়ের জন্য নিম্নবর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।

 

বীজতলা প্রস্তুতকরণ : চারা উৎপাদনের জন্য বীজতলা তৈরিঃ লাউ চারা বেডে বা পলিব্যাগে উৎপাদন করে নেয়া যায়। এজন্য আলো বাতাস স্বাভাবিকভাবে পাওয়া যায় এমন জায়গায় ৮-১০ ইঞ্চি উঁচু বেড করে নিতে হবে। বেডের উপর ১৩ ফুট x ১৭ ফুট আকৃতির ছাউনি তৈরি করা যেতে পারে । ছাউনির কিনারা বরাবর মাটি হতে ঘরের উচ্চতা হবে ২ ফুট এবং মাটি হতে ঘরের উচ্চতা হবে ২ ফুট এবং মাটি হতে ঘরের মধ্যভাগের উচ্চতা হবে প্রায় ৬ ফুট। পলিব্যাগে বীজ বপনঃ বীজ বপনের জন্য ৮ x ১২ সেমি বা এর থেকে কিছুটা বড় আকারের পলিব্যাগ ব্যবহার করা যায়। পানি অপসারণের জন্য তলায় ২-৩টি ছিদ্র করতে হবে। প্রথমে অর্ধেক মাটি ও অর্ধেক গোবর মিশিয়ে মাটি তৈরি করে নিতে হবে। মাটিতে বীজ গজানোর জন্য প্রয়োজনীয় রস আছে কিনা তা নিশ্চিত করে পলিব্যাগে মাটি ভরাতে হবে। অতপর প্রতি ব্যাগে ২টি করে বীজ বুনতে হবে। বীজের আকারের দ্বিগুন মাটির গভীরে বীজ পুতে দিতে হয়।


বীজতলা পরিচর্চা : চারার প্রয়োজনীয় পরিচর্যা নিশ্চিত করতে হবে। বেশি শীতে বীজ গজানোর সমস্যা হয়। এ জন্য শীতকালে চারা উৎপাদনের ক্ষেত্রে বীজ গজানোর পূর্ব পর্যন্ত প্রতি রাতে প্লাষ্টিক দিয়ে পলিব্যাগ ঢেকে হবে এবং দিনে খোলা রাখতে হবে।চারার প্রয়োজন অনুসারে পানি দিতে হবে। সাবধান থাকতে হবে যাতে চারা গায়ে পানি না পড়ে। পলিব্যাগের মাটি চটা বাধলে ভেঙ্গে দিতে হবে। লাউয়ের চারা গাছে রেড পামকিন বিটল নামে এক ধরনের লালচে পোকার ব্যাপক আক্রমন হয়। এটি দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে। চারার বয়স ১৬-১৭ দিন হলে তা মাঠে প্রস্তুত মাদায় লাগাতে হবে। চারা অবস্থায় অর্থাৎ বৃদ্বির প্রাথমিক পর্যায়ে কখনও কখনও রেড পাককিন বিটল এর আক্রমন হতে পারে। এটি দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে।

তথ্যের উৎস :

কৃষি প্রযুক্তি হাতবই, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ৬ষ্ঠ সংস্করণ, সেপ্টেম্বর, ২০১৭।