ফসল : ধান

রোগের নাম : পাতা পোড়া

রোগের কারণ : ব্যাকটেরিয়া

ক্ষতির ধরণ : আক্রান্ত গাছের নিচের পাতা প্রথমে নুয়ে পড়ে এবং শুকিয়ে মারা যায়। এভাবে গোছার সকল পাতাই মরে যেতে পারে। এ অবস্থাকে ক্রিসেক বা নেতিয়ে পড়া রোগ বলা হয়। চারা বা প্রাথমিক কুশি বের হওয়ার সময় গাছের পাতা বা পুরো গাছটি ঢলে পড়ে। মাঝে মাঝে আক্রমণ প্রবণ জাতের ধানে পাতাগুলো ফ্যাকাশে হলদে রঙের হয়। গাছের বয়স্ক পাতাগুলো স্বাভাবিক সবুজ থাকে, কিন্ত কচি পাতাগুলো সমানভাবে ফ্যাকাশে হলদে হয়ে আস্তে আস্তে শুকিয়ে মারা যায়। পাতা পোড়া রোগের লক্ষণের ক্ষেত্রে প্রথমে পাতার কিনারা অথবা মাঝে নীলাভ সবুজ রঙের জলছাপের মত রেখা দেখা যায়। দাগগুলো পাতার এক প্রান্ত, উভয় প্রান্ত বা ক্ষত পাতার যে কোন জায়গা থেকে শুরু হয়ে আস্তে আস্তে সমস্ত পাতাটি ঝলসে বা পুড়ে খড়ের মত হয়ে শুকিয়ে যায়। আক্রমণ প্রবণ জাতের ধানে দাগগুলো পাতার খোলের নিচ পর্যন্ত যেতে পারে। এক সময়ে সম্পূর্ণ পাতাটি ঝলসে যায় বা পুড়ে খড়ের মত হয়ে শুকিয়ে যায়। রোগ সমস্ত জমিতে ছড়িয়ে পড়লে পুড়ে গেছে বলে মনে হয়।

ফসলের যে পর্যায়ে আক্রমণ করে : যেকোন অবস্থা

ফসলের যে অংশে আক্রমণ করে : কাণ্ড , পাতা , কান্ডের গোঁড়ায়

ব্যবস্থাপনা :

রোগ দেখা দিলে বিঘা প্রতি (৩৩ শতকে) অতিরিক্ত ৫ কেজি হারে পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করুন।  চারা উঠানোর সময় যেন শিকড় কম ছেঁড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। রোগের প্রাথমিক অবস্থায় পটাশ সার এবং ৮০% সালফার প্রতি ১০ লিটার পানিতে ৬০ গ্রাম করে মিশিয়ে স্প্রে করা।

পূর্ব-প্রস্তুতি :

সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করতে হবে। এ রোগ দমনের জন্য বিআর২ (মালা), বিআর৩ (বিপ্লব), বিআর৪ (ব্রিশাইল), বিআর১৪, বিআর১৬, বিআর১৯ (মঙ্গল), বিআর২১ (নিয়ামত), বিআর২৬ (শ্রাবণী), ব্রি ধান২৭, ব্রি ধান২৮, ব্রি ধান২৯, ব্রিধান৩১, ব্রি ধান৩২, ব্রি ধান৩৭, ব্রি ধান৩৮, ব্রি ধান৪০, ব্রি ধান৪১, ব্রিধান৪২, ব্রি ধান৪৪, ব্রি ধান৪৫ ও ব্রি ধান৪৯ ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধক্ষমতাসম্পন্ন জাতের ধান চাষ করা। বীজ ও জমির মাটি শোধন।

বীজ শোধন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন

বীজতলা বা জমি শোধন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন

অন্যান্য :

রোগাক্রান্ত জমির ফসল কাটার পর নাড়া পুড়িয়ে ফেলতে হবে। ঝরো বৃষ্টির পর ইউরিয়া সার দিবেন না। রোগ দেখার পর ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ বন্ধ করুন ।

তথ্যের উৎস :

ফসলের বালাই ব্যবস্থাপনা,মোঃ হাসানুর রহমান, দ্বিতীয় সংস্করণ, জানুয়ারী ২০১৩।

ধান চাষের সমস্যা, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, ৫ম সংস্করণ, জুন ২০১৬।