আম এর ফসল তোলা এবং সংরক্ষণের তথ্য

ফসল : আম

ফসল তোলা : গাছে কিছু সংখ্যক আমের বোঁটার নিচের ত্বক যখন সামান্য হলুদাভ বং ধারন করে অথবা গাছ হতে ২-১টি আধাপাকা আম পড়া আরম্ভ করে তখন আম গাছ হতে সংগ্রহ করতে হবে। আম গাছ হতে ঝাকি দিয়ে না পেড়ে জালিযুক্ত বাঁশের কোটার সাহায্যে আম সংগ্রহ করা উত্তম। আম সংগ্রহের পর বোঁটাটি নিচের দিকে রাখলে আমের কশ গায়ে লাগবেনা। তা নাহলে কশ গায়ে লাগলে আমের উপর আঠালো হয়ে যায় এবং পাকা আমের রং নষ্ট হয়ে যায় এবং বাজার মূল্য হ্রাস পায়।

ফসল সংরক্ষণের পূর্বে :

গাছ ঝাঁকি দিয়ে আম না পেড়ে ছোট গাছের বেলায় হাত দিয়ে এবং বড় গাছের বেলায় জালিযুক্ত বাঁশের কোটার সাহায্যে আম সংগ্রহ করা ভাল।  

প্রক্রিয়াজাতকরণ :

অল্প দূরবর্তী স্থানে আম পাঠাতে হলে গাছ থেকে আম পাড়ার পর সরাসরি বাঁশের ঝুড়ি বা খাচি ভর্তি করে রিক্সা, ভ্যান, ঠেলাগাড়ি, নৌকা, লঞ্চ ইত্যাদি যানবাহনের সাহায্যে গন্তব্যস্থানে পাঠাতে হবে এবং পৌঁছানোর সাথে সাথে ঝুড়ি বা খাচি থেকে আম বের করে ফেলতে হবে৷ বেশী দূরবর্তী স্থানে আম পাঠাতে হলে কাঠের বাক্সের ভিতর আম পাঠাতে হবে৷ তবে বাক্স এমনভাবে বানাতে হবে যাতে সহজে বাক্সের ভেতর আলে-বাতাস আসা-যাওয়া করতে পারে৷ পঁচা ও রোগাক্রান্ত আম একই ঝুড়ি/বাক্সে রাখা ঠিক নয়৷ এতে ভাল আমগুলোও সহজেই নষ্ট হয়ে যায়৷

সংরক্ষণ : অন্যান্য ফল ও শাক-সবজিরমত আমেও খুব সহজেই ছত্রাক আক্রমণ করে৷ ডিপ্লোডিয়া নামক ছত্রাকের প্রতিকার ও নিয়ন্ত্রণ করতে হলে আম পাড়ার পর ৬% বোরাক্স দ্রবণে ৪৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় আমগুলো ৩ মিনিট ভিজিয়ে রেখে উঠিয়ে আনতে হবে৷ গরম পানিতে পরিপক্ক কাঁচা আম শোধন করা হলে, আমের গায়ে লেগে থাকা রোগ জীবাণু ও পোকা মুক্ত হবে। গ্রাহকের নিকট অন্য আমের তুলনায় এ শোধিত আমের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবে। মৌসুমে পরিপক্ক পুষ্ট কাঁচা আম গাছ থেকে সাবধানে পেড়ে তা আগে পরিষ্কার পানিতে ভালভাবে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর কোন পাত্রে ৫২- ৫৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পানি (পানিতে হাত ডুবালে সহনীয়মাত্রায়) গরম হলে তাতে পরিষ্কার করা আমগুলো ঠিক ৫ মিনিট রেখে এক সাথে উঠিয়ে নিতে হবে। আমের গা থেকে পানি শুকিয়ে গেলে স্বাভাবিক নিয়মে আমগুলো প্যাকিং করে বাজারজাত করতে হবে। এ ব্যবস্থায় আমের জাতের প্রকার ভেদে সাধারন আমের (নন ট্রিটেট) চেয়ে গরম পানিতে শোধন করা আমের আয়ু (সেলফ লাইফ) ১০-১৫ দিন বেড়ে যাবে। তবে এ পদ্ধতি প্রয়োগ সীমিত পরিমাণ আমের জন্য প্রযোজ্য।

তথ্যের উৎস :

বারো মাস ফল উৎপাদন, মৃত্যুঞ্জয় রায়,২০১৬,পরাগ প্রকাশনী।