পাট এর চাষপদ্ধতির তথ্য

ফসল : পাট

চাষপদ্ধতি :

উপযুক্ত আবহাওয়াঃ

পাট উষ্ণ ও আদ্র আবহাওয়ার ফসল। পাট উৎপাদন মৌসুমের অনুকূল তাপমাত্রা ২৫-৩৫ ডিগ্রি সেঃ এবং বাতাসের আদ্রতা ৯০% । পাট বর্ষজীবি, দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ। ১২৫-২০০সেঃমিঃ বৃষ্টিপাত পাট চাষের জন্য অনুকূল। বৃষ্টিপাতের মধ্যে ৩০সেঃমিঃ ফসলের প্রাথমিক অবস্থায় অর্থাৎ এপ্রিল-মে মাসের মধ্যে হলে ফলন বৃদ্ধি পায়। চারা বৃদ্ধি প্রাথমিক অবস্থায় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত পাটের জন্য ক্ষতিকর, কারণ চারা অবস্থায় পাট দাঁড়ানো পানি সহ্য করতে পারে না। গাছের দৈহিক বৃদ্ধির সময়ে একান্তরভাবে বৃষ্টিপাত পাটের উচ্চ ফলনে সহায়ক। মার্চ-মে মাসে শিলাবৃষ্টি হলে কচি পাট গাছ ভেঙ্গে ফলন কমে যায়।

বীজ হারঃ   

পাটের বীজের অঙ্কুরোদগম ৯০-৯৫% হলে ভাল। পুরাতন বীজ ব্যবহার করা উচিত নয়। পুরাতন বীজ নিম্নমানের হয়। 

ছকঃ পাটের বীজের হার  

পদ্ধতি

পাটের জাত ও বীজ হার(কেজি/ একর)

দেশি পাট

তোষা পাট

সারি পদ্ধতি

২.৪২-২.৮৩

১.৬১-২.০২

ছিটানো পদ্ধতি

৩.২৩-৪.০৪

২.৪২- ৩.২৩ 

ছিটিয়ে বপন অপেক্ষা সারিতে বুনলে বীজ কম লাগে। সারিতে বপন করলে পাটের আঁশের ফলন ও গুণগত মান বৃদ্ধি পায়। সারি পদ্ধতিতে চাষ করলে আন্তঃপরিচর্চা ও বালাইনাশক প্রয়োগ সহজ।

বীজ শোধনঃ পাট ফসলে প্রধানত বীজবাহিত (Seed borne)  রোগ হয়। যেমন-

কাল পট্টি  (Black band), কাণ্ড পচা (Stem rot), এনথ্রাকনোজ ( Anthracnose)

 বীজ শোধন করলে এই রোগসমূহের আক্রমনের কমে যায়। বীজ শোধনের জন্য বিস্তারিত জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন

বীজ শোধন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন

 বীজতলা বা জমি শোধন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন

পাটের বীজ বপনঃ

আমাদের দেশে সাধারণত ছিটিয়ে পাটের বীজ বপন করা হয়। এক্ষেত্রে শেষ চাষ দেওয়ার পর বীজ ছিটিয়ে এবং মই দিয়ে বীজ ঢেকে দিতে হবে। জমিতে বড় বড় ঢেলা থাকলে বোনার পর পর মুগুর দিয়ে তা ভেঙ্গে দিতে হবে। সারিতে বপনের ক্ষেত্রে দেশি পাটের সারি থেকে সারির দূরত্ব ২০-২৫সেমি এবং তোষা পাটের জন্য ২৫-৩০ সেমি। গাছ থেকে গাছের দূরত্ব উভয় পাটের ক্ষেত্রে ৫-৭সেমি।

চারা পাতলাকরণঃ

জমিতে গাছের সংখ্যা বেশি হলে চারা পাতলা করা প্রয়োজন। অধিক সংখ্যক চারা গাছের জন্য অধিক পরিমাণ খাদ্য ও পুষ্টির প্রয়োজন হয়। গাছের সংখ্যা অধিক হলে চারা লিকলিকে হয়। বীজ বপনের ৪০-৪৫ দিনের মধ্যে সাধারণত সুস্থ ও সবল গাছ রেখে দুর্বল ও পোকায় খাওয়া গাছ উঠিয়ে ফেলতে হয়। সারিতে বপন করা হলে, সারির ভিতর ৫-৮সেমির মধ্যে একটি করে গাছ রেখে বাকি গাছ উঠিয়ে ফেলতে হয়। গাছের উচ্চতা ১০-২০ সেমি থাকাকালীন সময়ে ২ কিস্তিতে চারা পাতলা করতে হবে। কারণ বেশি পাতলা হলে গাছে শাখা প্রশাখা জন্মে, ঘন হলে গাছ তেমনি জীর্ণ শীর্ণ হয়। উত্তম আঁশ পাওয়ার জন্য কোনটাই ভাল নয়। বিকাল বেলা মাটিসহ চারা শূন্যস্থানে রোপণ করতে হয়।

 

তথ্যের উৎস :

কৃষি প্রযুক্তি হাতবই, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ৬ষ্ঠ সংস্করণ, সেপ্টেম্বর,২০১৭।